(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখাসহ বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই পাস হলো ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। বৈশ্বিক মহামারি করোনাপরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সফলভাবে মোকাবেলা করে চলমান উন্নয়ন বজায় রাখা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য সামনে রেখে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে।
রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। পরে তা সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এই মজ্ঞুরি দাবিগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়।
এসব মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে বিরোধীদলের ছয়জন সংসদ সদস্য মোট ২৫১টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় খাতে তিনটি মজ্ঞুরি দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর স্বতন্ত্র ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।
ছাঁটাই প্রস্তাবে আলোচনা করেন জাতীয় পার্টির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য হামিদুল হক খন্দকার, পংকজ নাথ, আবুল কালাম ও নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।
এরপর সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৪ পাসের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করেন।
এর আগে গতকাল ২৯ জুন সংসদে অর্থ বিল-২০২৪ পাসের মাধ্যমে বাজেটের আর্থিক ও কর প্রস্তাব সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুমোদন করা হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত ১৫ হাজার কোটি টাকা কর ব্যতিত প্রাপ্তি ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। যা জিডিপি’র ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটে ঘাটতি ছিল জিডিপি’র ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক ঋণ থেকে ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আহরণ করা হবে। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ঋণ পরিশোধ খাতে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি রাখা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।