(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে বড় ধরনের রদবদল আনতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে এর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিগগিরই বেশ কয়েকটি জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ হতে পারে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কমপক্ষে ১০-১৫টি জেলায় ডিসি পদে রদবদল হতে পারে। এর মধ্যে কেউ নতুন করে নিয়োগ পাবেন আবার কেউ অন্য জেলায় বদলি হবেন।
দেশের ৬৪ জেলায় ডিসি পদে বর্তমানে তিনটি ব্যাচের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো হচ্ছে ২৪তম ব্যাচ। এ ব্যাচের ২৩ জন ডিসি পদে কর্মরত রয়েছেন। এ ছাড়া ২৫তম ব্যাচের ১৯ জন এবং ২৭তম ব্যাচের ২২ জন কর্মকর্তা ডিসি হিসেবে আছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত ডিসি পদে দুই বছর হওয়ার পর তাদের বদলি বা পরিবর্তন করা হয়। ২৪তম ব্যাচের ডিসিদের অনেকের দুই বছর সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য তাদের অনেককে বর্তমান কর্মস্থল পরিবর্তন করে নতুনদের নিয়োগ দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ডিসি পদে আসতে পারেন ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিসি পদে নিয়োগের জন্য এবার ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মূল ব্যাচ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিগগিরই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যাদের ডিসি পদ থেকে তুলে আনা হবে, তাদের মধ্যে যারা ভালো কাজ করেছেন এবং যাদের ‘ক্লিন ইমেজ’ রয়েছে, তাদের যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি মিলতে পারে। এ নিয়ে কাজ চলছে।
‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মচারীগণের পদায়ন নীতিমালা, ২০২২’ অনুযায়ী, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মচারীদের মধ্য থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার এক বছর পর ডিসি পদে পদায়নের জন্য ফিট লিস্ট প্রণয়ন করা হয়।
ফিট লিস্টে থাকা কর্মকর্তাদের উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক/সচিব, জেলা পরিষদ/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উভয় পদে মোট কমপক্ষে দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনের রেকর্ড এবং পুরো চাকরি জীবনের শৃঙ্খলা প্রতিবেদন সন্তোষজনক হতে হয়। প্রকল্প ও ক্রয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত জ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান এবং বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হয়। ম্যাজিস্ট্রেসি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিসি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ। তারা মাঠ পর্যায়ে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন। যারা যোগ্যতাসম্পন্ন এবং অতীতে কাজ করার ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হবে। এ ছাড়া বর্তমানে কর্মরত ডিসিদের মধ্যে কাউকে-কাউকে বড় বা গুরুত্বপূর্ণ জেলা হিসেবে পরিচিত জেলায় বদলি করা হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তিন ধাপে ২৮ জেলায় ডিসি পদে নিয়োগ ও রদবদল করে সরকার। এর মধ্যে ৬ জুলাই ১০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জেলাগুলো হচ্ছে– ঢাকা, রাঙামাটি, বান্দরবান, টাঙ্গাইল, পাবনা, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ফেনী ও গাজীপুর। এর তিন দিন পর ৯ জুলাই আরও ১০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এদিন বরগুনা, যশোর, হবিগঞ্জ, বাগেরহাট, বরিশাল, ভোলা, নেত্রকোণা, পটুয়াখালী, সিলেট ও কুষ্টিয়া জেলায় ডিসি নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর ১০ জুলাই আরও আট জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। জেলাগুলো হলো– মেহেরপুর, শেরপুর, জামালপুর, মুন্সীগঞ্জ, রংপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা। -ডেস্ক রিপোর্ট