(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা সম্পদ অর্জন এবং পাচারের অভিযোগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান ও আওয়ামী লীগের তিন সাবেক এমপির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তিন সাবেক সংসদ সদস্য হলেন— চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক এমপি সোলায়মান হক জোয়াদ্দার (ছেলুন), দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শেখর।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সংস্থাটির একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছে। দুদক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ফরিদপুরের মধুপুরে ভবন নির্মাণ, রাজউক-পূর্বাচলসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি ক্রয়; নিজ নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি, দি সিটি ব্যাংক পিএলসি এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে সঞ্চয়পত্র কেনার অভিযোগ রয়েছে।
তার স্ত্রী মির্জা নাহিদা হোসেনের নামে শান্তা দিগন্ত টাওয়ার-২, করবী, ফ্ল্যাট নং-৩ ই, ৩/৩ এ, পরিবাগ ঢাকাসহ ৪টি ফ্ল্যাট; এছাড়া দেশের বাইরে টাকা পাচার করে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন এবং কানাডায় একাধিক বাড়ি ক্রয়ের গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে দুদক।
অন্যদিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার আয় ও সম্পদের পরিমাণ ছিল বেশ কম। সেসময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ২২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬৬ টাকার। ১৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ২০ গুণ। বর্তমানে নগদ টাকাসহ চার কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৯৬৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক সোলায়মান হক।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে চুয়াডাঙ্গা সদরে ৩ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল ‘জোয়াদ্দার কুটির’ নামীয় বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতির অর্থে প্রায় ৮০-১০০টি এসি/ননএসি বাসসহ ১৫-২০টি ট্রাক; তার স্ত্রী ও নিজ নামে সঞ্চয়পত্র; ০১টি প্রাডো গাড়িসহ তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিমের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় বাড়ি নং-১২,সেক্টর নং-১০, রোড নং-১২,উত্তরা মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর বাড়ি, ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট ; ০২টি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৪-৬৮৮৮ ও ঢাকা মেট্রো-ঘ-২১-৫১৬২) কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক। এছাড়া তার নামে দিনাজপুরের উথরাইল মৌজা, পুচকুর মৌজা, রামপুর মৌজা ও জালালপুর মৌজায় বিপুল পরিমাণ জমি; এছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
আর মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শেখরের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে মাগুরা জেলার জাগলা নামীয় স্থানে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে অটোব্রিকস ফিল্ডের ব্যবসা; মাগুরা জেলার চাওলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত নগর পদ্দবিলে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে মৎস্য খামার; তার নিজ নামে ১০টি ট্রাক কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক। আত্মীয় স্বজনের নামে গাড়ি, মাগুরায় একাধিক বাণিজ্যিক ভবন, বিভিন্ন জায়গায় অনেক জমি এবং নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদে ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে শিখরের বিরুদ্ধে। -নিউজ ডেস্ক