মো. ইসমাইল হোসেন (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। দিনাজপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও কৃষকরা ইরি-বোরো চাষে মনোযোগী হয়েছেন। ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত। কৃষকরা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঠান্ডা পানিতে নেমে বীজ তোলার পাশাপাশি জমি প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগাম আলু উত্তোলনের পর ফাঁকা জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ চলছে। গ্রামে গ্রামে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, এবার হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধানের চাষে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হিরা-১, হিরা-২, সোনার বাংলা, ব্রী-২৮, ব্রী-২৯, ব্রী-৮১, ব্রী-৭৪, ব্রী-৮৯ সহ স্থানীয় জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে। হাইব্রিড জাতের লক্ষ্যমাত্রা ২৯ হাজার ৩৫ হেক্টর এবং উপশী জাতের লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৪৭৫ হেক্টর।
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হাইব্রিড জাত থেকে প্রতি হেক্টরে ৫ মেট্রিক টন এবং উপশী জাত থেকে ৪ দশমিক ৫১ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মোট ৮ লক্ষ ২ হাজার ৮৮ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকদের মতে, বীজ, সার এবং শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি চাষাবাদে কিছুটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তবে আগাম চারা রোপণ এবং সঠিক পরিচর্যার কারণে ফসল উৎপাদনে ভালো ফল আশা করা হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া জানান, শীতের কারণে বীজতলার সামান্য ক্ষতি হলেও প্রয়োজনীয় পরিচর্যার মাধ্যমে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি উপকরণের প্রাপ্যতায় নিধার্রিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষকদের রঙিন স্বপ্ন নতুন ফসলের ফলনে গোলা ভরার। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে এ মৌসুমে বাম্পার ফলন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।