(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন, কাশ্মিরে একটি মরণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত কর্তৃক সম্পর্ক হ্রাসের ঘোষণা এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপের জবাব দিতে, সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি, যা কেবলমাত্র বাইরের বড় ধরনের হুমকি কিংবা সন্ত্রাসী হামলার পর ডাকা হয়, বেসামরিক ও সামরিক উভয় স্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা ফোরাম।
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক ডার এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক আহ্বান করেছেন, যাতে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করা যায়।’
ভারত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পাহালগামে সশস্ত্র বন্দুকধারীদের হামলায় বহু নিরীহ দেশি পর্যটক নিহত হয়েছেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার জন্য ‘কাশ্মির রেজিস্ট্যান্স’ নামে একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করছে, যা তাদের মতে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তাইবা এবং হিজবুল মুজাহিদীনের একটি শাখা।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা, যা দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টনের দীর্ঘদিনের চুক্তি; ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামানো; পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের বহিষ্কার এবং এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ; একটি প্রধান সীমান্ত চেকপোস্ট বন্ধ ঘোষণা; বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, যার ফলে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে যাত্রা সীমিত হবে।
কাশ্মির, যা ১৯৪৭ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত ও বিতর্কিত অঞ্চল, বহুদিন ধরেই বিদ্রোহী সহিংসতার কেন্দ্রবিন্দু। ভারত অভিযোগ করে আসছে যে, পাকিস্তান কাশ্মিরের সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সমর্থন করে, যদিও পাকিস্তান বলে, তারা শুধুমাত্র কাশ্মিরিদের ‘আত্মনির্ধারণের অধিকারের’ পক্ষে কূটনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দেয়। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থার মতো উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, যখন উভয় দেশ একে অপরের ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালায়।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ায় আরেক দফা কূটনৈতিক উত্তেজনা ও নিরাপত্তাজনিত অনিশ্চয়তার জন্ম দিতে পারে।—সূত্র আরব নিউজ