(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সম্মেলন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ এ দেশে আসা এক জাপানি বিনিয়োগকারী চরম প্রতারণা ও বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার শিকার হয়ে বিনিয়োগ গুটিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
প্রতারণা ও হয়রানির শিকার জাপানি বিনিয়োগকারীর নাম কাওরি ফুনাহাশি। তিনি একজন নারী উদ্যোক্তা। জাপানি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিসের একজন পরিচালক তিনি। নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিংয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কাওরি ফুনাহাশি এনএসিএস বিডি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন বাংলাদেশে। এনএসিএস বিডির চেয়ারম্যান হন কাওরি। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশন সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করে আসছে। জাপানি নাগরিক কাওরি ফুনাহাশি এনএসিএস বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকলেও স্থানীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশি নাগরিক খোরশেদ আলম মাইকেলকে। প্রণোদনা হিসাবে প্রথমে তাঁকে কোম্পানির ১ শতাংশ শেয়ারও দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, শুরুর দিকে সব কার্যক্রম ভালোভাবে চললেও দুই বছরের মাথায় এসে প্রশ্নবিদ্ধ তৎপরতা শুরু করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অফিসের জন্য ফ্ল্যাট কেনার কথা বলে তিনি কোম্পানির ব্যাংক হিসাব থেকে ৬০ লাখ টাকা তোলেন। কিন্তু ফ্ল্যাটের বুকিং দেন নিজের মেয়ের নামে। অবশ্য বিরোধের বিষয়টি জেনে পরে ডেভেলপার কোম্পানি আমিন ল্যান্ডস্কেপ খোরশেদ বা তাঁর মেয়ের নামে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি করা স্থগিত রেখেছে। অন্যদিকে খোরশেদ কোম্পানির ২৩ মাসের বাড়িভাড়া বাবদ ১১ লাখ টাকা তুলে ‘ব্যক্তিগত কাজে’ ব্যয় করেন। অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কেনার কথা বলে আরও ১ কোটি টাকা তুলে নিয়ে কর্তৃপক্ষকে একটি জাল দলিল ধরিয়ে দেন তিনি। এ ছাড়া কোম্পানির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি গাড়ি কেনার নাম করে ‘কার কালেকশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু কোম্পানি কোনো গাড়ি পায়নি। পরিশোধ করা টাকাও ফেরত আসেনি। এভাবে বহু আশা নিয়ে বাংলাদেশে আসা জাপানি বিনিয়োগকারীকে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। কাওরি ফুনাহাশি ২০২২ সালে রাজধানীর ভাটারা থানায় প্রতিকার চেয়ে মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তে বেরিয়ে আসে খোরশেদ আলম জালিয়াতি ও প্রতারণা করে কাওরির প্রতিষ্ঠিত এনএসিএস বিডি লিমিটেড কোম্পানির ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার অর্থসম্পদ আত্মসাৎ করেছেন। মামলা করার পর তিন বছরের বেশি সময় চলছে আইনি লড়াই। -নিউজ ডেস্ক