(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজাহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এই রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিসের অবসান হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তার আইনজীবী শিশির মনির।
মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণার সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
শিশির মনির বলেন, আজকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আজকে থেকে, এখন থেকে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম একজন নির্দোষ ব্যক্তি। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা মনে করি সত্য জয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে। ইতোপূর্বে জামায়াতের এবং বিএনপির ছয়জন শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্ততপক্ষে পাঁচজন জেলে মৃত্যুবরণ করেছেন। দুনিয়ার ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন নির্যাতনের সামিল।
‘এটিএম আজহারুল ইসলাম সৌভাগ্যবান, তিনি ন্যায় বিচার পেয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল বলে। আমরা মনে করি এ রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিসের অবসান হয়েছে। আমরা এটাও মনে করি- এই রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আদালতের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।’
শিশির মনির বলেন, আজকে রায়ে আদালত চারটি পর্যবক্ষেণ দিয়েছেন। প্রথমটি হলো- বাংলাদেশেসহ এই ভারতীয় উপমহাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা বদলে দেওয়া হয়েছিল এটা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। দ্বিতীয়টি হলো- আদালতের সামনে উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ কোনো অ্যাসেসম্যান্ট ছাড়াই এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি ছিল বিচারের নামে অবিচার।
তিনি আরও বলেন, যেসমস্ত তথ্য প্রমাণ আদালতের সামনে হাজির করা হয়েছিল, অতীতের আপিল বিভাগ এটা সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আজকে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা মনে করি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সত্য বিজয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাভূত হয়েছে।
‘আজকে আমরা আদালতের কাছে একটা সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়েছি। আদালত আমাদের আবেদন মঞুজর করেছেন। আদালত বলেছেন, আমরা চেষ্টা করব। আজকে এবং কালকের মধ্যেই এই সংক্ষিপ্ত আদেশ প্রস্তুত হয়ে এ টি এম আজহারুল ইসলাম যেন মুক্তি পেতে পারেন সেই জন্য সকল আইনি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিশির মনির বলেন, আমরা মনে করি পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রকাশিত হওয়ার পর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অতীতের অনেক রায় সম্পর্কে এই রায়ে অনেক পর্যবেক্ষণ থাকবে। আমরা মনে করি সরকারের উচিত হবে- এই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পরে একটা রিভিউ বোর্ড গঠন করে অতীতের রায়গুলোকে পুর্নবিবেচনা করা, যেন মৃত্যু পরবর্তীতে হলেও যাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, অবিচার করা হয়েছে, তাদের পরিবার, তাদের দল এবং এদেশের মানুষ যেন ন্যায় বিচার পেতে পারে। -নিউজ ডেস্ক