(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এ অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনালের অনুমতি পেলে আজকের অভিযোগ দাখিলের কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হতে পারে।
এদিকে, গুম প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনাকে ‘গুম ও আয়নাঘরের নিউক্লিয়াস’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হবে।
তাজুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে ১০-১৫টি গুরুত্বপূর্ণ গুমের ঘটনার তদন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো জুন মাসের মধ্যেই জমা পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার চেষ্টা করছি। যাতে মানবাধিকারের কোনো লঙ্ঘন না হয় এবং বিচারের নামে অবিচার না ঘটে।
প্রধান প্রসিকিউটর আরও বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনাই গুমের ধারাকে থামিয়ে দিয়েছে। এই তারিখটি ছিল এক বড় বাঁকবদল। তিনি জানান, বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অনেকে তাদের ব্যক্তিগত কাজকর্ম পিছিয়ে দিয়েছেন, এমনকি হজে যাওয়ার পরিকল্পনাও।
গত ১২ মে শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত শেষ হয়। সেদিন তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার নির্দেশে জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে ১,৫০০ জন নিহত এবং ২৫,০০০ মানুষ আহত হন। বহু নারী ও শিশুও আক্রমণের শিকার হন।
তদন্তে পাওয়া প্রমাণ অনুযায়ী, হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশ ও বক্তব্যকে সহিংসতা উসকে দেওয়ার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
একই মামলায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সতর্কভাবে এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিচালিত হবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তাজুল ইসলাম। -ডেস্ক রিপোর্ট