(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী রেজা হাসান বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বাসে চড়ে বসেছিলেন রংপুরের উদ্দেশে। কল্যাণপুর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত যেতেই তার লেগে যায় পাঁচ ঘণ্টার বেশি। ১০ ঘণ্টার বেশি সময়েও তিনি যমুনা সেতু পার হতে পারেননি। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ ঘণ্টা সময় লেগেছে ঢাকা থেকে রংপুরে পৌঁছাতে।
শুধু রেজা নয়, এবারের ঈদযাত্রায় উত্তরের পথের যাত্রীদের সবারই এভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকছে গাড়ি। মাইলের পর মাইল যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো সড়ক।
গত রোজার ঈদে ঈদযাত্রা ছিল অনেকটা স্বস্তির। বড় কোনো ভোগান্তির খবর কোথাও থেকে পাওয়া যায়নি। অনেকের ধারণা ছিল, এবারের ঈদযাত্রাও স্বস্তির হবে। তবে অন্যান্য পথে বড় ভোগান্তির খবর পাওয়া না গেলেও উত্তরের পথের যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তিতে। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থেকে প্রতি মুহূর্তের খবর দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা শুধু বাড়ছেই।
ঢাকা থেকে পাবনা পর্যন্ত পৌঁছতে সাহিদুলের সময় লাগে প্রায় ১৫ ঘণ্টা। তিনি অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন, ‘এরকম হবে জানলে এবার ঈদে বাড়িতেই আসতাম না। গত ঈদে তেমন কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। ভেবেছিলাম এবার ঈদেও ভোগান্তি হবে না। কিন্তু সেই আগের চিত্র আবার ফিরে এসেছে। জানি না, সরকার কী করছে। গত ঈদে স্বস্তির ঈদযাত্রা হলে এবার হবে না কেন!’
এদিকে শুক্রবার (৬ জুন) সকালেও স্থবির হয়ে রয়েছে উত্তরের পথ। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে।
উত্তরের পথে গত বুধবার (৪ জুন) রাত থেকেই গাড়ির অতিরিক্ত চাপের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার সারা দিন যানজট ছিল। আর রাতে বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি বিকল হওয়ার কারণে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করে।
মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। যমুনা সেতুর ওপর একাধিক গাড়ি বিকল হওয়ার কারণে রেকার দিয়ে সরিয়ে নিতে সময় লাগায় যানজট লেগে যায়। এছাড়া টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা অংশে সকালে একটি মালবাহী ট্রাক উল্টে মহাসড়কে পড়ে যায়। এ সময় ৩ জন আহত হন। এই দুর্ঘটনার ফলে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শরীফ জানান, এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের সূচনা মূলত টোল প্লাজার অংশ থেকে। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে যানজট নিরসনে কাজ করছে।
এই কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি দুর্ঘটনার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আস্তে আস্তে তা কেটে যাচ্ছে। আজ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা করছেন তারা। -ডেস্ক রিপোর্ট