(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) রাজধানী তেহরানসহ ইরানের ৮টি শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এ অভিযানের নাম দিয়েছে ‘দ্য রাইজিং লায়ন’।
গত বছর অক্টোবরে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অভিযাত শাখা দ্যা রেভোলুশ্যানারী গার্ড। তবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কল্যানে ইরানি সেসব ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে দিয়েছিল আইডিএফ।
সাম্প্রতিক এক মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের হামলার সাফল্যকে পূঁজি করেই ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেতানিয়াহু এবং এই হামলার স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য— ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস করা এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য— ইরানে ক্ষমতাসীন কট্টর ইসলামপন্থি সরকারের পতন ঘটানো।
মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানকে নিজের অস্তিত্বগত হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে ইসরায়েল। কারণ, ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানের ক্ষমতায় আসীন হওয়া কট্টর ইসলামপন্থি সরকার ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বের অধিকারে বিশ্বাসী নয়। বহু বছর ধরে এই সরকারের নেতারা প্রকাশ্যেই বলে আসছেন যে বিশ্বের মানচিত্র থেকে ইসরায়েলকে মুছে ফেলা তাদের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।
এ লক্ষ্য পূরণের জন্য ইয়েমেনে হুথি, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহসহ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আরও কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী গড়ে তুলেছে ইরান। এ গোষ্ঠীগুলোর মূল লক্ষ্য ইসরায়েলকে ধ্বংস করা এবং তেহরান নিয়মিত এসব গোষ্ঠীকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে ইরানের মদতপুষ্ট গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে আসছিল। তবে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের অতর্কিত হামলার পর গাজায় যখন সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ, সে সময় নতুনভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে হুথি এবং হিজবুল্লাহ। গাজায় অভিযান চালানো পাশাপাশি ইয়েমেন ও লেবাননে গত বছর বিমান অভিযান চালিয়ে এ দুই গোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি করেছে ইসরায়েল।
এ অবস্থায় ইরানের পরমাণু প্রকল্প স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাগত হুমকি বিবেচনা করছে ইসরায়েল। তাছাড়া বর্তমানে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেতানিয়াহু নিজে বেশ ঝামেলায় পড়েছেন। টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় অভিযান এবং সেখানে আটক সব জিম্মিকে এখনও উদ্ধার করতে না পারায় ইসরায়েলে তার প্রতি জনসমর্থন কমছে।
এমনকি কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে আগাম নির্বাচনের জন্য বিল জমা পড়েছিল এবং সেই বিলেরও ওপর ভোটাভুটিও হয়েছিল। খুবই অল্প ভোটের ব্যবধানে নেতানিয়াহু সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন।
ফলে, নিজের গদি বাঁচানো এবং ইরানকে পরমাণু প্রকল্প থেকে বিরত রাখতে দেশটিতে হামলা করার জন্য এই সময়কে বেছে নেওয়া উপযুক্ত মনে করেছেন নেতানিয়াহু। -ডেস্ক রিপোর্ট