স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দিনাজপুরের বিরলে দিনে দুপুরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকীয় ঘটনার অবসান হয়েছে। পুলিশের তৎপরতায় মাত্র ১১ ঘন্টার মাথায় এই নাটকীয় ছিনতাই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে প্রশংসায় ভাসছেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ ।
এদিকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে এমন ঘটনাটি জানার সাথে সাথে ডিবি সহ দিনাজপুর জেলা পুলিশ এর রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামেন। টানা তৎপরতা ও বিভিন্ন রকমের তদন্তের মাধ্যমে অবশেষে প্রকাশ পেল, লোনের হাত থেকে রেহাই পেতে ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম নিজেই এই ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ছিলেন তিনি।
ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম বিরল উপজেলার ৬ নং ভান্ডারা ইউনিয়নের গোপালপুর বড় বাড়ি গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে। তিনি একজন স্যার-কীটনাশক এবং ধান ও ভুট্টা ব্যবসায়ী। অপরদিকে ঘটনার পর বুধবার রাত ১২ টার দিকে দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল হালিম তার ভেরিফাইট ফেসবুকে লিখেন, ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই অতপর পুলিশের জালে আসল অপরাধী। অবশেষে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন করলাম। ব্যাংকের সিসি লোনের টাকা শোধ করতে না পারায় টাকা ছিনতাই নাটকের অবতারনা করলেন মোঃ মইনুল ইসলাম নামের বিরল উপজেলার এক ব্যবসায়ী। তার নিজ বাসায় তল্লাশী করে ছিনতাই নাটকের টাকাসহ অন্যান্য মালামাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংক হতে উত্তোলনকৃত ৮ লাখ সহ মোট ১১ লাখ টাকা, মোটরসাইকেলের চাবি ও মোবাইল ফোন ছিল। নাটক শেষ হল। তিনি লিখেন, পুলিশের প্রতি আস্থা রাখুন, পুলিশকে সহায়তা করুন।
এ ব্যপারে দিনাজপুর পুলিশ সুপার মোঃ মারুফাত হুসাইন দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আমি অনেকটা কনফার্ম ছিলাম আমি ঘটনাস্থলে গেলে ছিনতাইকারী বা যারা টাকা নিয়েছে আমরা তা দ্রুত উদ্ধার করতে পারবো। এই জন্য দ্রুতই ছুটে আসি। টাকা ছিনাতইয়ের যে বিষয়টি আমরা শুনেছিলাম সেখানে নাকি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সেই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমিসহ ডিবি’র টীম এবং আমার যারা অফিসার আছে সবাই চলে আসি। এছাড়াও বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছবুরসহ সকল টিম মাঠে নামার পর বাস্তবাতায় জানতে পারি যে, ব্যবসায়ী মইনুলের নানাবিধ লোন আছে। সেই লোনের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য তিনি নিজেই এই পলিসিটি এ্যপ্লাই করেছেন। ঘটনার পর আমি ব্যাংকের লোকের কাছ থেকে এবং তার কাছ থেকেও শুনেছিলাম। তিনি ব্যাংক থেকে ৮ লাখ টাকা তুলেছিলেন। সেই টাকা এবং তার সাথে আরোও ৩ লাখ টাকা সহ ১১ লাখ টাকা আমরা তার বাড়ী থেকে উদ্ধার করি। সেই টাকা আমরা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি।
ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি থানায় একটি জি,ডি করার জন্য এই নাটকটি করেছি। তবে বিষয়টি যে এতদুর গড়াবে তা আমি বুঝতে পারিনি।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুর সোয়া ২ টার দিকে বিরল হতে দিনাজপুর যাওয়ার পথে বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন মহাজন বাড়ী ব্রিজের নিকটে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম জানান । টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে এলাকায় সোরগোল পড়ে যায় এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সাথে সাথে দিনাজপুর জেলা পুলিশ মাঠে নামেন।
২৪ ঘন্টার মধ্যে দিনাজপুর জেলা পুলিশ এই রহস্য উৎপাদনের জন্য প্রশংসায় ভাসছে।