বুধবার , ৯ জুলাই ২০২৫ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন অনেক এলাকা, দুর্ভোগ চরমে

প্রতিবেদক
admin
জুলাই ৯, ২০২৫ ৩:১০ পূর্বাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে, কখনো ঝিরিঝিরি। কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে দিয়ে হওয়া এই টানা বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ তলিয়ে গেছে দেশের কয়েকটি জেলার অনেক এলাকা। এতে বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ আর দুর্দশা।

ঢাকা থেকেই শুরু করা যাক। রাজধানীতে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় হালকা-পাতলা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যেসব এলাকার রাস্তাঘাট একটু খারাপ, পানি-কাঁদায় সেসব সড়ক দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। পালিশ করা জুতা পরে বের হলে বাসায় ফিরে তা চেনা দায়।

Dhaka
ঢাকায় বৃষ্টির চিত্র।

রাজধানীর এই বৃষ্টিতে অফিসগামী লোকজন এবং রিকশা-ভ্যানচালক, দিনমজুরদের মতো খেটে খাওয়ারা পড়েছে সবচেয়ে বেশি বিপাকে। বাসা থেকে আকাশ পরিষ্কার দেখে ছাতা বা রেইন কোট ছাড়া বের হয়ে রাস্তায় অনেককেই বৃষ্টির দৌড়ানি খেতে হচ্ছে। ভিজতে হচ্ছে অফিস থেকে ফেরার পথেও।

এদিকে তেমন যাত্রী পাচ্ছেন না রিকশাচালকরা। অফিসগামী লোকজন বৃষ্টি থেকে বাঁচতে কম দূরত্বের পথ যেতেও বাসে চড়ে বসছেন। ফলে আয় কমে রিকশাচালকদের মুখ ফিকে। অনেকে আবার বৃষ্টিতে ভিজে অসুস্থ হওয়ার শঙ্কায় বেকার দিন কাটাচ্ছেন। কাজে বেরোতে পারছেন না দিনমজুররাও।

বিভিন্ন জেলার যে অবস্থা

রাজধানী ঢাকার চেয়ে বিভিন্ন জেলা শহরের অবস্থা বেশি খারাপ। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সেসব শহরের মূল সড়ক। কয়েক ফুট পর্যন্ত পানি জমে হাঁটা তো দূর অস্ত, যানবাহনে করে চলাচলই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন অন্তত তেমনটাই বলছে।

Chitagogo
চট্টগ্রামে এভাবেই ধসে পড়ে পাহাড়।

চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণ, পাহাড় ধস ও জলাবদ্ধতার শঙ্কা

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রামে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে, যা এখনো চলমান। এই বৃষ্টি আরও এক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এর ফলে জেলার পাহাড়ি এলাকায় ধস এবং নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

৪ ফুট পানির নিচে ফেনী শহরের প্রধান সড়ক

সপ্তাহের গোড়া থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারণে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শহরের প্রধান শহীদ শহিদুল্লা কায়সার সড়কের ওপর দিয়ে কোথাও কোমর পরিমাণ, কোথাও হাঁটু পরিমাণ পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

feni-rain

এর ফলে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের দুই পাশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরের দিকে চলমান অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে কোমর পরিমাণ পানি বেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে।

এছাড়া ফেনীর বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে এবং শহরের অলিতে-গলিতে কোমর পরিমাণ পানিতে মানুষ আটকা পড়েছে। এতে করে জনজীবনের স্থবিরতা নেমে এসেছে।

অন্যদিকে, এ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১০টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ।

noakhali1
নোয়াখালীর চিত্র।

নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে গেছে সড়ক

বর্ষণে আবারও পানিতে তলিয়ে গেছে নোয়াখালী জেলা শহর ও উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। কাঁচা ও আধা-পাকা সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও আবার কোমর পানি জমে জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ স্থবিরতা।

জানা গেছে, নোয়াখালী সদর, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচরের বিভিন্ন অঞ্চলের নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে জেলা শহর মাইজদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৎস্য অফিস, জেলা খানা সড়ক, পাঁচ রাস্তার মোড়, পৌর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে।

এদিকে অনেক বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগামী লোকজনকেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দোকানপাটও।

borishal
বরিশালের দুর্ভোগের চিত্র।

বরিশালে অবিরাম বর্ষণে জীবনযাত্রা ব্যাহত

চার দিনের অবিরাম বর্ষণে নাকাল হয়ে পড়েছে বরিশালবাসী। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কর্মজীবী, শিক্ষার্থী আর নিম্নআয়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। বৃষ্টিতে অনেকেই ঘরবন্দি সময় কাটাচ্ছেন।

মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় গত শনিবার থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টি হতে শুরু করে এই জেলায়। এখনো বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে ড্রেন, নালা ও ডোবা পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। মৃতপ্রায় খালগুলোতে পানি আটকে ময়লা আবর্জনা পথে উঠে এসেছে। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতারও তৈরি হয়েছে।

patuakhali
পটুয়াখালীর চিত্র।

পটুয়াখালীতে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

গত চার দিনের টানা ভারী বর্ষণে পটুয়াখালী জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা। প্লাবিত হয়েছে জেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। সমুদ্র বন্দর এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে। ফলে উপকূলীয় এলাকায় উত্তাল রয়েছে সাগর। শত শত মাছ ধরার ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে এসেছে।

Bhola
ভোলায় বন্ধ লঞ্চ।

ভোলা থেকে ১০ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ

বৈরী আবহাওয়ায় ভোলা থেকে ১০টি রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এর মধ্যে ইলিশা-মজুচৌধুরীর হাট রুটটি বন্ধ চার দিন ধরে। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বসবাসরত বাসিন্দারা।

আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় জানিয়েছেন ভোলা নদী বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন।

তিনি বলেন, অবিরাম বৃষ্টিতে সমুদ্রে তিন নম্বর সংকেত জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। নদী বন্দরে এক নম্বর সংকেত দেখালেও ভোলার কয়েকটি রুট এই আবহাওয়ায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এজন্য ওইসব রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

Rohinga
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চিত্র।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৮০০ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত

টানা এক সপ্তাহের ভারী বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প। পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটছে। এতে অন্তত ৮০০ ঝুপড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় ৩ হাজার রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে শতাধিক পরিবারকে সরিয়ে লার্নিং সেন্টারসহ বিভিন্ন নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

খুলনায় ধসে পড়েছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ভবনের ছাদ

টানা বৃষ্টির কারণে খুলনা সদরের সাব-রেজিস্ট্রি ভবনের রেকর্ড রুমের ছাদ ধসে পড়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভোরে বিট্রিশ আমলের তৈরি জরাজীর্ণ চুন-সুরকির ছাদটির মাঝের অংশ ধসে পড়ে। এতে বৃষ্টির পানিতে রেকর্ড রুমে থাকা শতাধিক বই ভিজে গেছে।

bagerhat
বাগেরহাটের চিত্র।

জলমগ্ন বাগেরহাট শহর, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে বাগেরহাট শহরের সড়ক থেকে গলি, বাড়ি থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। হাঁটুপানি জমেছে শহরের অধিকাংশ এলাকায়। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ।

গত রোববার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বাগেরহাট শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশের এলাকা, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ অনেক জায়গায় হাঁটুপানি জমে আছে।

এছাড়া অনেক দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। রাস্তা-ঘাটে পানি জমে থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।

satkhira
সাতক্ষীরায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।

তলিয়ে গেছে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল

টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। কোথাও কলাগাছের ভেলা, কোথাও আবার ককশিটে শিশু ও জিনিসপত্র নিয়ে যাতায়াত করছেন পানিতে আটকে পড়া লোকজন। এতে সুপেয় পানি, রান্না ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়েছেন হাজারো পরিবার।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় মোট ২৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে ১০২ মিলিমিটার। অতিবৃষ্টির কারণে পৌরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ডে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, লঘুচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারাদেশে আগামী কয়েক দিন এভাবেই টানা বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে। সূত্র : ঢাকা মেইল

সর্বশেষ - অর্থনীতি