বৃহস্পতিবার , ৭ আগস্ট ২০২৫ | ৮ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

ঋণ কেলেঙ্কারিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিবেদক
admin
আগস্ট ৭, ২০২৫ ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) অভিনব কৌশলে কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী এবং ব্যাংকটির সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুদকের ঢাকা ও চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা দুটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক শোয়াইব ইবনে আলম এবং উপ-সহকারী পরিচালক মো. সজীব আহমেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘ক্রিসেন্ট ট্রেডার্স’ নামে একটি নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে চট্টগ্রামের জুবলী রোড শাখায় কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই একটি হিসাব খোলা হয়। এরপর সৈয়দ নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির করা ঋণ আবেদনের ভিত্তিতে শাখার কর্মকর্তারা মিথ্যা তথ্য সম্বলিত পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং যাচাই ছাড়াই শাখার ক্রেডিট কমিটির সদস্যরা ২৫ কোটি টাকার ঋণের সুপারিশ পাঠান ইউসিবির প্রধান কার্যালয়ে।

মূল্যায়নে ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ থাকা সত্ত্বেও ইউসিবির ৪৫৭তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় ঋণ অনুমোদন পায়। তদন্তে দেখা যায়, আরামিট গ্রুপের কর্মচারীর আত্মীয়কে মালিক সাজিয়ে মিথ্যা ও জাল কাগজপত্র দাখিল করে এই ঋণ অনুমোদন করানো হয়। পরে অর্থ নগদে উত্তোলন, স্থানান্তর ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়।

একই কৌশলে ‘প্রগ্রেসিভ ট্রেডিং’ নামের আরও একটি নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ইউসিবির কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ২৩ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে অপর মামলায়।

দুদকের মামলায় বলা হয়, এসব ক্ষেত্রে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীদের আত্মীয়দের নাম ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠান খুলে এবং ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে কৌশলে ব্যাংক ঋণ আদায় করা হয়। এতে ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা ছিল এবং তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ অনুমোদনে সহযোগিতা করেন।

দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

চাঞ্চল্যকর এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় আসামিদের তালিকায় রয়েছেন— সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবির সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক এমডি মোহাম্মদ শওকত জামিল, আবুল এহতেশাম আবদুল মোহাইমিন, সাবেক পরিচালক এম এ সবুর, ইউনুছ আহমদ, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, হাজি আবু কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, সৈয়দ কামরুজ্জামান, মো. শাহ আলম, শরীফ জহির, ড. সেলিম মাহমুদ ও ড. মো. জোনাইদ শফিক।

তালিকায় আরও রয়েছেন ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা, যেমন: সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফুল ইসলাম ও শ্রাবন্তী মজুমদার, সাবেক এফএভিপি কান্তা দাশ গুপ্তা, মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, এক্সিকিউটিভ অফিসার মুঝায়োনা সিদ্দিকা, ক্রেডিট ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম রাকিব, ম্যানেজার অপারেশন মোসাদ্দেক মো. ইউসুফ এবং শাখা প্রধান আলমগীর কবির।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিচয়ধারীরা, যারা মূলত আরামিট গ্রুপের কর্মচারী বা কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে রয়েছেন, প্রগ্রেসিভ ট্রেডিংয়ের মালিক ও আরামিটের হিসাব বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোছাইন চৌধুরী, ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মালিক ও আরামিটের এজিএম মো. আব্দুল আজিজ, আরামিট সিমেন্টের পিয়ন মো. ইয়াছিনুর রহমান।

এটাই প্রথম নয়, এর আগেও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করেছে দুদক। চলতি বছরের ৩০ জুলাই ‘রিলায়েবল ট্রেডিং’ এর নামে জাল নথিপত্রে ১৫ কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ২৭ জনকে আসামি করে মামলা হয়।

২৪ জুলাই ‘ভিশন ট্রেডিং’ এর নামে ২৫ কোটি টাকার ভুয়া ঋণ অনুমোদন করিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে ৩১ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। ১৭ এপ্রিল ‘ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং’, ‘ক্লাসিক ট্রেডিং’ ও ‘মডেল ট্রেডিং’ এর নামে ২০ কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা হয় আরও একটি মামলা।

এরইমধ্যে আদালতের আদেশে যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর নামে থাকা ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও জমিসহ স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ফ্রিজ করা হয়েছে। পাশাপাশি আদালতের অন্য এক আদেশে তাদের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেখানে জমা রয়েছে প্রায় ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের আদেশও দিয়েছেন। এছাড়া ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর আদালতের আরেক আদেশে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। -ডেস্ক রিপোর্ট

সর্বশেষ - আর্ন্তজাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত