সোমবার , ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

দিনাজপুর জেলায় অর্ধেকের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই: ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম

প্রতিবেদক
admin
সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫ ৪:২৮ পূর্বাহ্ণ

আব্দুস সালাম, হেড অব নিউজ (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দিনাজপুর জেলার অর্ধেকের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই। ১ হাজার ৮৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৩৮টি বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি ও সরাসরি নিয়োগ বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে এসব বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা এবং শিক্ষার মান দুটোই মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলার সব ক’টিতেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে কিছু উপজেলায় শূন্যপদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক। যেমন, চিরিরবন্দরে ১৯৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১৫টি, বীরগঞ্জে ২৩০টির মধ্যে ১১৮টি, এবং পার্বতীপুরে ২০৬টির মধ্যে ১০৫টি বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক নেই। এমনকি দিনাজপুর সদর উপজেলার ১৮৬টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৪টি বিদ্যালয়ও এই সংকটের শিকার।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা আছে। এর অধীনে ৬৫% পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫% সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হয়। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে একটি মামলার কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় পদোন্নতি বন্ধ আছে। পাশাপাশি, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াও দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত। এর ফলে একদিকে যেমন অনেক প্রধান শিক্ষক অবসরে চলে গেছেন, তেমনই সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতিও আটকে আছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক জটিলতার পাশাপাশি শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. মতিয়ার রহমান জানান, দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে চাকরি করেও পদোন্নতি না পাওয়ায় সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় তাদের হতাশা আরও বেড়েছে। তাদের দাবি, অবিলম্বে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে শতভাগ পদোন্নতি দেওয়া হোক।
অনেক বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তারা একই পদমর্যাদার হওয়ায় অন্যান্য শিক্ষকরা তাদের নির্দেশনা মানতে চান না। এতে করে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানান সদর উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম ফারুক।
পুলহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন মনে করেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসের পাঠদানও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে শিক্ষার মান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটিএম তোফায়েল হোসেনও একই কথা বলেন।
একজন অভিভাবক লিজা আক্তার বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় এবং শিক্ষকের সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের বিদ্যালয়ের ক্লাস পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে। তিনি দ্রুত শিক্ষক-স্বল্পতা দূর করার দাবি জানান।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুজ্জামান জানান যে, মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি আশা করেন, মামলা নিষ্পত্তি হলে পদোন্নতির মাধ্যমে এই শূন্যপদগুলো দ্রুত পূরণ করা যাবে। এরপরও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষার মান উন্নয়নে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে দিনাজপুরের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা আরও বড় সংকটের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। তাই আইনি জটিলতা নিরসন করে দ্রুত শূন্যপদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তারা।

সর্বশেষ - অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত