(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দেশজুড়ে আলোচিত ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ীদের উদ্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, অতি উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। জয়-পরাজয় ছিল, আছে এবং থাকবে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আইনজীবী শিশির মনির লিখেছেন, জয়-পরাজয় ছিল, আছে এবং থাকবে। অতি উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। আবার একেবারে ভেঙে পড়ারও কিছু নেই। সবই সাময়িক। ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্ব ও কর্মই আসল বিবেচ্য বিষয়। সবার জন্য শুভকামনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আইনজীবী ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আইনি লড়াই করে নির্বাচনকে টিকিয়ে রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদে ২৩টিতে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার পর ঢাবির সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিক ফলাফলে তাদের নাম ঘোষণা করেন ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
ভিপি পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।
১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন এসএম ফরহাদ। তিনিও ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে লড়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট এবং হয়েছেন তৃতীয়।
এজিএস পদেও বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মুহা. মহিউদ্দীন খান। তিনি পেয়েছেন ১১ হাজার ৭৭২ ভোট। ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।
এ ছাড়া আরও ২০ পদে বিজয় লাভ করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতেমা তাসনিম জুমা পেয়েছেন ১০ হাজার ৬৩১ ভোট। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ইকবাল হায়দার। আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে খান জসিম পেয়েছেন ৯ হাজার ৭০৬ ভোট।
ছাত্র পরিবহন সম্পাদক হিসেবে লড়েন আসিফ আবদুল্লাহ। তিনি পেয়েছেন ৯ হাজার ৬১ ভোট। ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৭ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আরমান হোসাইন। কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা পেয়েছেন ৯ হাজার ৯২০ ভোট। মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাখাওয়াত জাকারিয়া। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এমএম আল মিনহাজ পেয়েছেন ৭ হাজার ৩৮ ভোট। ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন সাবিকুন্নাহার তামান্না (১০ হাজার ৪৮ ভোট), সর্বমিত্র (৮ হাজার ৯৮৮ ভোট), আনাস ইবনে মুনির (৫ হাজার ১৫ ভোট), ইমরান হোসেন (৬ হাজার ২৫৬ ভোট), তাজিনুর রহমান (৫ হাজার ৬৯০ ভোট), মেফতাহুল হোসেন আল মারুফ (৫ হাজার ১৫ ভোট), বেলাল হোসাইন অপু খান (৪ হাজার ৮৬৫ ভোট), রাইসুল ইসলাম (৪ হাজার ৫৩৫ ভোট), মো. শাহিনুর রহমান (৪ হাজার ৩৯০ ভোট), মোছা. আফসানা আক্তার (৫ হাজার ৭৪৭ ভোট) ও রায়হান উদ্দিন (৫ হাজার ৮২ ভোট)।
প্যানেলের বাইরে বাকি পাঁচ পদে জয়ী হয়েছেন অন্য প্রার্থীরা। তারা হলেন– সমাজসেবা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবাইর বিন নেছারী, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বী এবং সদস্য পদে হেমা চাকমা ও উম্মা উসউয়াতুন রাফিয়া।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। বড় কোনো ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে ডাকসুর ৩৮তম নির্বাচন।
এবার ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হয়েছে ১৩টি পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৩৫ জন। ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ এবং ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার ছিলেন ২০ হাজার ৯১৫ জন। -নিউজ ডেস্ক



















