(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) মাই টিভি রংপুর ব্যুরোপ্রধান মাহমুদুল হাসানকে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ৫ মাস পর মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক। মামলায় পীরগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ মামলায় ৪ জনকে আসামিসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ থানায় শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মামলাটি দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল বিকেলে কুরিয়ার সার্ভিসে ওই প্রতিনিধির নামে দু’টি পারসেল আসে। পার্সেলে দু’টি কাফনের কাপড়ের সঙ্গে দু’টি প্রিন্ট করা চিঠি ছিল। ওই চিঠির মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। কয়েকটি ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান মাই টিভির রংপুর ব্যুরোপ্রধান মাহমুদুল হাসান। পার্সেলের ঠিকানা সূত্রে কাফনের কাপড় ও চিঠিগুলো গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে পাঠানো হয়েছে। পার্সেলে প্রেরকের ঠিকানায় পীরগঞ্জের আরেক সাংবাদিক মিলনের নাম ও ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়।
চিঠির একটি খামে লেখা ‘অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি তোর কারণে। এবার আমার খেলা শুরু। ঠিকমতো পছন্দের খাবার খেয়ে নে রে হারামখোর।’ অপর খামে লেখা ‘ভাটা মালিকের কাজই মূলত সব সময় আগুন নিয়ে খেলা করা, তোর সময় শেষ, রংপুর মিঠাপুকুর বা সুবিধামতো জায়গা পেলেই খেল খতম। অপেক্ষার প্রহর গণনা শুর’। এর আগেও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরায় নকল গো-খাদ্য ভুসি তৈরির কারখানায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েও হামলার শিকার হয়েছিলেন সাংবাদিক মাহমুদুল হাসানসহ তিনজন সংবাদকর্মী।
মামলা বিষয়ে মুঠোফোনে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান জানান, আমাকে কুরিয়ার পার্সেলের মাধ্যমে হত্যার হুমকির বিষয়ে ৫ মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসন কোনো ক্লু বের করতে পারেনি। তারপরও হত্যার হুমকির বিষয়টি বের করতে সন্দেহজনকভাবে পীরগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ মামলায় ৪ জনকে আসামিসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছি। কেননা পীরগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটা সংবাদ করেছি সে কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হত্যার উদ্দেশে এসব করেছে। আমি অনুরোধ করছি এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত আছে প্রশাসন যেন সুষ্ঠু তদন্তসহ মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে৷
সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সচিব সিনিয়র লিয়াকত আলী বাদল বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে যেভাবে সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপরে হামলা হচ্ছে এভাবে হামলা চলতে থাকলে এই পেশায় ভালো মানুষ আর আসতে চাইবে না। যারা সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যেন ব্যবস্থা নেন এবং অপরাধীরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পার্সেলে চিঠির খামে হত্যার হুমকির ব্যাপারে মামলা দায়ের হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আর এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। -নিউজ ডেস্ক



















