শুক্রবার , ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

জুলাই সনদ স্বাক্ষর নিয়ে হচ্ছেটা কী?

প্রতিবেদক
admin
অক্টোবর ১৭, ২০২৫ ৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ

# জুলাই সনদের ভিত্তিতে গণভোট আগে চায় জামায়াত

# গণভোট আগে না পরে এটি জাতীয় সনদের বিষয় নয়: বিএনপি

# আইনিভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদে সই না করার সিদ্ধান্ত এনসিপির

# আনন্দঘন পরিবেশে দলিল স্বাক্ষর হবে: আলী রীয়াজ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) রাষ্ট্র সংস্কারের সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা সম্বলিত জুলাই জাতীয় সনদ ঘিরে এখনো ‘সংকট’ কাটেনি। সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলেও ভোটের সময়, প্রক্রিয়া এবং সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে এখনো ভিন্নমত আছে। জামায়াত চাইছে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট, বিএনপি বলছে এটি সনদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়, এনসিপি আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত স্বাক্ষর করবে না, আর বামপন্থী চার দল ইতিমধ্যেই সরে গেছে। ফলে সনদে স্বাক্ষরের আগে এখনো আছে ‘অনিশ্চয়তা’।

শুক্রবার জুলাই জাতীয়সনদে স্বাক্ষর করবে রাজনৈতিক দলগুলো। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার এই অনুষ্ঠান আয়োজনে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এর আগে মঙ্গলবার রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর কাছে সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেই সঙ্গে শুক্রবারের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়।

জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আহ্বানে বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা অংশ নেন।

বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদারসহ কমিশনের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে তাৎক্ষণিক স্বস্তি এলেও সনদে স্বাক্ষর করা, না করা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে এখনো জটিলতা কাটেনি।

বুধবারের বৈঠকের পর দলের অবস্থান তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের জানান, গণভোট আগে হতে হবে। তারা নভেম্বর মাসে গণভোটের প্রস্তাব করেছেন। নভেম্বরে গণভোট হলে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, এটা তারা চান। দলটি মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হলে ভোট কম পড়বে।

জামায়াত নেতা তাহের বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনকে তারা বলেছেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেগুলো একটি প্যাকেজ করে, একটি প্যাকেজেই গণভোট হতে হবে। গণভোটের এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলো নির্বাচনী আচরণে কিছু পরিবর্তন আনবে।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘উচ্চকক্ষ এবং ‘পিআর সিস্টেম বাই ভোটার নট বাই দি এমপিস’ (সারা দেশে একটি দল যত ভোট পাবে, তার অনুপাতে উচ্চকক্ষে আসন পাবে) এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছে। সুতরাং নির্বাচনের আগেই এই সিদ্ধান্ত জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে এবং সেই অনুযায়ী উচ্চকক্ষের ভোট হবে। যদি এটা নির্বাচনের দিনেই হয়, তাহলে উচ্চকক্ষ তো পাস হলো না। তাহলে কি আবার একটা নির্বাচন হবে। এটা একটা উদ্ভট আলোচনা।’

বিএনপি শুক্রবার জুলাই সনদে সই করতে প্রস্তুত আছে জানিয়ে আলোচনায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গণভোট আগে না পরে এটি জাতীয় সনদের কোনো বিষয় নয়। বাস্তবায়নের জন্য ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে। বাস্তবায়নের জন্য ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে। আমাদের কন্টিনিউয়াস (ধারাবাহিক) সমর্থন আপনার প্রতি ছিল, আছে।’

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের কন্টিনিউয়াস (ধারাবাহিক) সমর্থন আপনার প্রতি ছিল, আছে। কিন্তু এটা কন্ডিশনাল (শর্তযুক্ত)। আমাদের সমর্থন আরও অব্যাহত থাকবে, এটা সীমাহীন নয়। আমরা চাই, আপনার নেতৃত্বে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন, এটাই হচ্ছে কন্ডিশন (শর্ত)। আপনার প্রতি আমাদের সীমাহীন সমর্থন নয়, আমাদের সীমারেখা আছে। আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য এই সীমারেখার মধ্যে আপনাকে সমর্থন দিচ্ছি। আপনি দয়া করে এটা অনুধাবনের চেষ্টা করবেন।’

এদিকে আইনিভিত্তি ছাড়া জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া অর্ডারে স্বাক্ষর করা মূল্যহীন হবে। সেই বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এনসিপি অনুষ্ঠানে অংশীদার হব না। শুরু থেকেই আমরা ঐকমত্য কমিশনে অংশগ্রহণ করেছি। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার দাবি করেছি। তবে সনদে সইয়ের প্রক্রিয়া ঘটলেও আইনি ভিত্তি দেওয়া হচ্ছে না, আর সনদপত্রের মূল টেক্সটও আমাদের দেখানো হয়নি। আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা স্বাক্ষরে যাব না। এনসিপি সনদ প্রণয়নে স্বচ্ছতা ও আইনি নিশ্চয়তা দেখতে চায় এবং সেই পর্যন্ত দল কোনো প্রতারণামূলক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে না।’

এর আগে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করার কথা জানিয়েছে বামপন্থী চারটি রাজনৈতিক দল। দলগুলো হলো-বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাসদ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী)।

বুধবার দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুলাই সনদের সংবিধানের চার মূলনীতি উল্লেখ করা হয়নি এবং আরও কয়েকটি কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এছাড়া গণফোরাম হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সংক্রান্ত টেলিগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত থাকবে-এটি নিশ্চিত করা না হলে তারা স্বাক্ষর করবে না। তবে জুলাই সনদের স্বাক্ষর নিয়ে সংকটের যে তথ্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে তাকে ‘বিভ্রান্তি’ বলছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

আনন্দঘন পরিবেশে দলিল স্বাক্ষর হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘নাগরিকেরা যাতে বুঝতে পারেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী ঐক্যমতে পৌঁছেছে, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা কী এবং অগ্রগতি কত দূর হয়েছে, সেটি তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। আমরা লক্ষ্য করেছি, গতকাল ও আজকে কিছু তথ্য এদিক-সেদিক প্রচারিত হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমি জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ এবং আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশাবাদী, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আপনারা এই ঐক্যের ধারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সর্বোপরি, জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের শক্তিকে আমরা একত্রে বজায় রাখব, এই বিশ্বাসেই আমরা দাঁড়িয়ে আছি এবং সেটি অব্যাহত রাখব।’ -নিউজ ডেস্ক

সর্বশেষ - আর্ন্তজাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত