শনিবার , ১৮ অক্টোবর ২০২৫ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

ক্ষমতায় গেলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী, জানালেন ফখরুল

প্রতিবেদক
admin
অক্টোবর ১৮, ২০২৫ ১:১৬ অপরাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অপেক্ষায় গোটা দেশ। জনগণের ভোটে কোন দল বসবে ক্ষমতায়, কে হবেন নতুন সরকারপ্রধান, এ নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই। আলোচনাও তুঙ্গে। কারও মতে বিএনপি যাবে এবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়, কারও ভবিষ্যদ্বাণী জামায়াতে ইসলামীর দিকে।

তবে বড় দল এবং একাধিকবার দেশ পরিচালনার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় পাল্লা ভারী শহীদ বিএনপিরই। এই দলটি জিতলে কে হবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, এই আলোচনা দেশজুড়ে। অবশেষে সে কথাই জানিয়ে দিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সংবাদসংস্থাকে (বাসস) দেওয়া সাক্ষাৎকারে জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিক জানান, বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী হবেন বরাবরের মতো বেগম খালেদা জিয়াই, যদি তিনি সুস্থ থাকেন। তার অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে দলের ভেতর কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই বলেও জানান তিনি।

এছাড়া ওই সাক্ষাৎকারে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জোট গঠনসহ নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। ঢাকা মেইল পাঠকদের জন্য মির্জা ফখরুলের সেই সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়ে আপনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। কেমন অভিজ্ঞতা হলো?

মির্জা ফখরুল: জাতিসংঘে যাওয়ার অভিজ্ঞতাই প্রথম আমার। নিঃসন্দেহে এটা একটা অত্যন্ত এক্সাইটিং অভিজ্ঞতা তো ছিলই, সেই সঙ্গে আনন্দিত ছিলাম এজন্য যে, অন্তত সরকার এবং বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করেছি এবং আমাদের যে ডেলিভারেশন, যেটা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, সে বক্তব্যটাও মোটামুটি ভালোভাবে হয়েছে, ভালোই কাভার করেছে। আর আমরা বাইরে সাইডলাইনে বিভিন্ন আঙ্গিকে বেশ কিছু মিটিং করেছি। এরপর, ওখানে প্রবাসী বাংলাদেশি যারা আছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমরা কথা বলেছি, তারা তাদের কথা বলেছে। ফলে সার্বিকভাবে আমাদের সফর সফল হয়েছে।

২৪-এ গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে, বিশ্ব সম্প্রদায় সেই বাংলাদেশকে কীভাবে দেখছেন?

মির্জা ফখরুল: এখন তো বাংলাদেশ সম্পর্কে সব দেশগুলোরই অত্যন্ত আগ্রহ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক বেশি আগ্রহী। কারণ তারা এখানে অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে চায়। তারা চায় যে, একটা ইলেকশন হওয়ার পর নির্বাচিত সরকার এলেই তখন তাদের বিনিয়োগ এখানে আসবে। এছাড়া অন্যান্য দেশগুলোও বাংলাদেশ সম্পর্কে যথেষ্ট আগ্রহী।

বিশেষ করে থার্ড ওয়ার্ল্ডের দেশগুলোর ভীষণ আগ্রহ রয়েছে। তাছাড়া আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ও মধ্যপ্রাচ্যের যথেষ্ট আগ্রহ আছে। ওভারঅল, বাংলাদেশ এই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গোটা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে।

বাংলাদেশে যে বড় একটা গণঅভ্যুত্থান হলো, এই বিষয়টিকে বিশ্ব সম্প্রদায় কীভাবে দেখছে?

মির্জা ফখরুল: গণতন্ত্রের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের যে আনুগত্য ও আগ্রহ এবং দেশের সাধারণ মানুষ যে এভাবে জীবন দিতে পারে, এটা তাদের কাছে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত বিস্ময়ের। সেই সঙ্গে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে আলাদা মর্যাদার আসন তৈরি করে দিয়েছে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, বিশ্বের পক্ষ থেকে আপনারা কী ধরনের সাপোর্ট পাবেন বলে আভাস পাচ্ছেন?

মির্জা ফখরুল: নির্বাচনের সঙ্গে যে সকল সংস্থা কনসার্ন থাকে, তারা— যেমন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইতোমধ্যে বলেছে যে, তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে। একইভাবে জাতিসংঘেরও এই নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। তারাও এখানে পর্যবেক্ষক পাঠাতে আগ্রহী। যুক্তরাজ্যও পর্যবেক্ষক পাঠাবে।

গোটা বিশ্বে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সবারই এখন আগ্রহ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে। কারণ, এর আগের নির্বাচনগুলো তো তারা দেখেছে। সে কারণে তাদের আগ্রহটা বেশি এবং এর আগেরগুলোতে তো তারা অনেকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর অনুমতিও পায়নি। সেজন্য নির্বাচন কমিশন তাদেরকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর পুরোপুরি সুবিধা দিচ্ছে।

সাধারণ মানুষের মনে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে, নির্বাচন হবে কি হবে না। বিএনপিতে এমন কোনো সন্দেহ বা শঙ্কা আছে কি না?

মির্জা ফখরুল: নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না- এমন কোনো সন্দেহের কারণ নেই। কারণ সরকার প্রধানের যে কমিটমেন্ট, সরকারের যে কমিটমেন্ট, নির্বাচন কমিশন যেভাবে তৈরি হয়েছে, তাতে করে আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, নির্বাচন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন কমিশনের প্রতি আপনাদের আস্থা কেমন?

মির্জা ফখরুল: যথেষ্ট আস্থা আছে। আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখেছি, আমি মনে করি যে, তারা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সক্ষম হবে।

নির্বাচন যেহেতু সামনে, বিএনপির প্রস্তুতিও নিশ্চয়ই আছে। আলোচনা আছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর তুলনায় প্রস্তুতিতে বিএনপি অনেকটা পিছিয়ে আছে। আসলে কি ব্যাপারটা তাই?

মির্জা ফখরুল: ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়। কারণ একটা প্রোপাগান্ডা শুরু হয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে— ‘বিএনপি প্রস্তুত নয়’, ‘বিএনপিতে ক্যান্ডিডেট নেই’, ‘এখনো ক্যাম্পেনই শুরু করতে পারেনি’। এগুলো ঠিক না। বিএনপি সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।

যখন ফ্যাসিজম ছিল, তখনও কিন্তু নির্বাচনে বিএনপি গেছে। ১৮-তে বিএনপি নির্বাচনে গেছে। এখন তো বিএনপি অনেক বেশি প্রস্তুত। বিএনপির তৃণমূলের পর্যায়ে নেতাকর্মীরা অনেক বেশি সজাগ ও একটিভ। জনগণের কাছে গিয়ে তারা দলের জন্য কাজ করছে।

বিএনপির প্রার্থীরা কবে নাগাদ নির্বাচনি মাঠে নামবেন?

মির্জা ফখরুল: প্রার্থীরা তো প্রায় নেমে গেছে। যারা যারা সম্ভাব্য প্রার্থী হতে ইচ্ছুক বা যারা নির্বাচন করতে চায়, তারা তো এমনিই মাঠে আছে। এখন দলীয় নমিনেশন চূড়ান্ত হলে তো চূড়ান্তভাবে নামবে। কিন্তু এখন তো তারা অলরেডি মাঠে আছে। কাজ করছে।

প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন ফ্যাক্টরটি এবার বেশি কাজ করবে আপনাদের?

মির্জা ফখরুল: এখানে প্রধানত তারা মূল্যায়িত হবেন, যারা ২৪-এর গণআন্দোলনসহ গত ১৭ বছর বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত ছিল। একইসঙ্গে দলীয়, ইমেজ তো অবশ্যই থাকতে হবে। এই সমস্ত ব্যক্তিরাই এবার নির্বাচনে নিঃসন্দেহে প্রার্থী হিসেবে প্রাধান্য পাবে।

প্রার্থী বাছাইয়ে বিশেষ কোনো চমক থাকবে এবার?

মির্জা ফখরুল: চমক বলতে ইয়াং জেনারেশনটা এবার আগের চাইতে আরেকটু বেশি অগ্রাধিকার পাবে। কারণ তারা অনেক বেশি অ্যাকটিভ। আমাদের এমনি যারা ওল্ড জেনারেশন আছেন, তারা অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ। তারা হয়তো নির্বাচন করতে চাইবেন না। বাকি আসবে কিছু প্রফেশনাল। তাছাড়া নারীরা যথেষ্ট অগ্রাধিকার পাবে।

নির্বাচনি জোট নিয়ে বেশ গুঞ্জন আছে। বিএনপিতে কি এরকম কোনো নির্বাচনি জোট হতে যাচ্ছে? কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না?

মির্জা ফখরুল: নির্বাচনি জোট নিয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা কারও সঙ্গে হয়নি। তবে আন্দোলনের সময় যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে পরে একটা সরকার গঠন করার ঘোষণা তো আমাদের আছে। কারা থাকবে বা থাকবে না, সে দলগুলোর নিজস্ব ব্যাপার। নির্বাচনি জোট নিয়ে এই মুহূর্তে আমাদের কোনো কার্যক্রম চলছে না।

নির্বাচনি কোনো জোট তবে হচ্ছে না?

মির্জা ফখরুল: এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিএনপির নির্বাচনি ইশতেহারটা এবার কেমন হবে? ৩১ দফার বাইরে কোনো বিশেষ চমক আছে কি না?

মির্জা ফখরুল: মূলত ৩১ দফাই হবে ভোটের ইশতেহার। তার সঙ্গে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে আনএমপ্লয়মেন্ট যে ইস্যুটা আছে, এটা আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা মনে হয়। এজন্য আমরা কীভাবে আনএমপ্লয়মেন্টকে দূর করতে পারি এবং এমপ্লয়মেন্টের সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতে পারি, ইনভেস্টমেন্ট আরও বাড়াতে পারি, সে বিষয়গুলো ইশতেহারে উঠে আসবে।

কিছু রাজনৈতিক দল জুলাই সনদের পক্ষে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি। ব্যাপারটা কি পরবর্তীতে কোনো সংকট তৈরি করবে?

মির্জা ফখরুল: না, ব্যাপারটা হচ্ছে ঐকমত্য তৈরি তো হবে না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামতগুলো বিভিন্ন রকম থাকবেই। সবার মতামতগুলোকে নিয়ে, যে প্রপোজাল তৈরি হবে সেটা নিয়ে জনগণের কাছে যাবে। নির্বাচনে সেখানে জনগণ যাদের একসেপ্ট করবে, তারাই তো দেশের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবে এবং তারাই সেভাবে চালাবে।

আমরা যে জিনিসটাকে গুরুত্ব দিয়েছি সেটা হলো- সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে চাই না। সংবিধানের মধ্যেই এমেন্ডমেন্ট করে যেগুলো আমাদের জন্য উপযোগী হচ্ছে না, সেগুলোকে পরিহার করে নতুন কোনো চিন্তা-ভাবনা নিয়ে আসা, সেটাই আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।

Fakhrul_2
বাংলাদেশ সংবাদসংস্থাকে (বাসস) দেওয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাক্ষাৎকারের মুহূর্ত। ছবি- সংগৃহীত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির কথা বলা হয়েছে। বিশেষ আদেশ জারি ও নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

মির্জা ফখরুল: নির্বাচনের দিন গণভোট হলে সেটা সম্ভব, কিন্তু নির্বাচনের আগে গণভোট এটা আমরা মানতে রাজি নই, এটা হতেই পারে না।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মূল চ্যালেঞ্জগুলো কী কী? বিএনপি যদি জনগণের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারে, সেক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করবে?

মির্জা ফখরুল: প্রধান চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটা স্টেবল জায়গায় নিয়ে আসা। বিগত সরকার যেভাবে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, ব্যাংকিং সিস্টেম ধ্বংস করেছে, লুটপাট হয়েছে, বাইরে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে এবং বিনিয়োগের জায়গাগুলোকে বন্ধ করে ফেলেছে— এই জায়গাগুলোকে এই সরকার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। সেটাকে আমরা আরও ভালো করতে চাই। এমনকি সেগুলোকে আমরা আরও সূক্ষ্মভাবে দেখে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বাড়ানোর চেষ্টা করব অবশ্যই।

বিএনপির বাইরে এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনে পিআর সিস্টেমসহ আরও বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে অনেকটা একরোখা মনোভাব পোষণ করছে, এর সমাধান কোথায়?

মির্জা ফখরুল: নির্বাচনকেন্দ্রিক দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলা পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর ক্যারেক্টর। তবে তারা যে দাবিগুলো তুলছে, তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা কঠিন ব্যাপার। কারণ, কিছু দাবির প্রতি আমাদের জোর আপত্তি রয়েছে। যেমন- পিআরের ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য খুবই পরিষ্কার- পিআর সিস্টেমে আমাদের দেশের জনগণ অভ্যস্ত নয়, এটার জন্য প্রস্তুত নয়, সুতরাং আমরা এটা মেনে নিতে রাজি নই।

বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে কীভাবে একত্রিত রাখবে? 

মির্জা ফখরুল: ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের শক্তি তো যারা আন্দোলন করেছে, তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যেই থাকবে। একত্রিত তারা থাকবে। এটাই তো স্বাভাবিক। তাছাড়া গণতন্ত্রের চর্চা করলেই সেটা থাকবে। আমি যদি গণতান্ত্রিক চর্চাটা করি, গণতন্ত্রের নীতিগুলো মেনে চলি, ইনস্টিটিউশনগুলোকে যদি ডেভেলপ করি, তাহলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবো।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে একসময় বিএনপির খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল বা একসময় জোট ছিল। এখন সম্পর্কের দূরত্ব কী নিয়ে?

মির্জা ফখরুল: রাজনীতিতে পার্মানেন্ট জোট বলতে কিছু থাকে না, পার্মানেন্ট বন্ধুত্ব বলতে কিছু থাকে না। একেকটা সময় রাজনীতির বিভিন্ন পারিপার্শ্বিকতার ওপর নির্ভর করে যে, তার রাজনৈতিক মিত্র কে হবে, অথবা কে হবে না। অ্যালায়েন্স হয় এবং নির্বাচনের সময় কোয়ালিশনস হয়। তো সেটা আগে ছিল। এই মুহূর্তে সেটা দৃশ্যমান নয়। মতের মিল না হলে এটা তো হতেই পারে। অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাছাড়া সম্পর্ক খারাপ কই? একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আরেকটি রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক যেমন থাকা উচিৎ, জামায়াতের সঙ্গেও বিএনপির তেমনই আছে।

জামায়াতে ইসলামী অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি জোট গঠনের কথা বলছে। বিষয়টিকে বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ মনে করে কি না?

মির্জা ফখরুল: আমরা কোনোটাকেই চ্যালেঞ্জ মনে করছি না। আমরা মনে করি যে, এবার নির্বাচনে আমরা একটা ল্যান্ডস্লাইড বিজয় পাবো, ইনশাআল্লাহ। কারণ আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। অতীতে দল হিসেবে আমাদের দেশ চালানোর পজিটিভ রেকর্ড আছে।

আমরাই এই দেশের সংস্কার এনেছি। এই দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় গেছি। আমরাই এই দেশে প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্ট থেকে পার্লামেন্টারি ফর্ম অব গভর্নমেন্টে গেছি। এই দেশের রেমিট্যান্স—শ্রমিকদেরকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থাসহ পোশাক শিল্পের বিকাশ ঘটিয়েছি। অর্থনীতিতে এবং রাজনীতিতে যে মৌলিক পরিবর্তন আমরা ঘটিয়েছি। যার মধ্যে দিয়ে আমাদের দেশ এগিয়ে গেছে।

নারী শিক্ষার ব্যাপারে ম্যাডাম জিয়ার যে অবদান, সেটা তো আমাদের সময়ই। প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাপারে যে অবদান, সেটা আমাদের সরকারের আমলে। স্বাস্থ্য খাতে নতুন যতগুলো হাসপাতাল তৈরি হয়েছিল, সেটা কিন্তু ম্যাডামের। এরপর হয়নি। আমাদের তো সব প্লাস রেকর্ড, আমাদের মার্ক তো অনেক বেশি।

জাতীয় সরকারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিএনপি, তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা কতটুকু?

মির্জা ফখরুল: এটা ডিপেন্ড করবে নির্বাচনের পর নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মতামতের ওপর, সেই ভিত্তিতেই হবে। তবে আমরা স্টিল স্টিক টু আওয়ার কমিটমেন্ট।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে, আমরা সবাই জানি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন?

মির্জা ফখরুল: এটা আমি ঠিক এই মুহূর্তে মন্তব্য করতে রাজি নই। কারণ এই দলটির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আছে, সেটা উইথড্র হলে যে সিচুয়েশন তৈরি হবে, সেটার উপর নির্ভর করবে। তবে আমি মনে করি, উইথড্র হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া এবং আগামীর রাজনীতি সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কী?

মির্জা ফখরুল: আওয়ামী লীগ তো নিজেরাই নিজেদের বিলীন করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের মনে তাদের আর কোনো জায়গা আছে বলে আমি মনে করি না। সুতরাং তাদের ফের রাজনীতিতে ফিরে আসা সহজ হবে না। যে রাজনৈতিক দল গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে, সিরিয়াসলি বিচার হতে হবে।

আলোচনা রয়েছে আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে এগোচ্ছে, আপনার কি মনে হয়?

মির্জা ফখরুল: না, না, সেটা আমি মনে করছি না। বরং এর মধ্যেই বর্তমান সরকারের পক্ষে যতটা সম্ভব, সেটা তারা করছে। ট্রাইব্যুনালও বাড়িয়েছে, ফলে বিচার কাজ দ্রুতই এগোচ্ছে। সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে, বিচার কাজ সম্ভবত শেষের দিকে চলে এসেছে।

আপনারা কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক করছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে কী ধরনের বার্তা আসছে?

মির্জা ফখরুল: ওরা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তারা চায় যে বিএনপি এই নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে পার্টিসিপেট করবে। বিএনপি যে কমিটমেন্টগুলো দিয়েছে, তারা দেখতে চায় গণতন্ত্রকে চর্চা করার ক্ষেত্রে সেগুলো কতটা উপযোগী।

বিশেষ করে তাদের কতগুলো জায়গা আছে, যেমন পশ্চিমা বিশ্ব নারী পার্টিসিপেশনটা বেশি দেখতে চায়। একইসঙ্গে তারা মানবাধিকার প্রশ্নগুলোকে বড় করে দেখে। শ্রমের অধিকার নিশ্চিত হওয়া প্রশ্নে তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো হিউম্যান রাইটসকে বড় করে দেখে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত একটি প্রাসঙ্গিক ইস্যু, এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কেমন?

মির্জা ফখরুল: ভারতের সঙ্গে বরাবরই আমরা চেয়েছি একটা ফাংশনাল রিলেশনশিপ। সৎ প্রতিবেশীর মতো একটা আচরণ ভারত করবে। অর্থাৎ আমাদের সঙ্গে যে সমস্যাগুলো আছে, সেই সমস্যাগুলো সমাধানে তারা পজিটিভভাবে পদক্ষেপ নেবে। যেমন পানি সমস্যা আছে, এটার সমাধান হয়নি। বর্ডারে যে হত্যা, এটা বন্ধ করার জন্য আমাদের অনেক বেশি সচেষ্ট থাকতে হবে। সেইসঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের ট্রেডিং ব্যালেন্স, সেটাকে দূর করার জন্য আমরা অবশ্যই চিন্তা করব।

সমস্যা হচ্ছে ভারতের হস্তক্ষেপ। ভারত যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করে, সেটাই আমরা চাইব।

জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের ওপর বাইরের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বিএনপি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কি না?

মির্জা ফখরুল: আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যাই, তখন আমাদের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর একটা সুসম্পর্ক রেখে তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং এখানে একটা সুসম্পর্ক তৈরি করা। সেগুলোর জন্য যতটুকু দরকার, সে উদ্যোগ তো আমরা অবশ্যই নেব।

সেদিন রাতে হঠাৎ করেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার স্বামীর কবর জিয়ারত করতে গিয়েছেন। এটা কি কোনো বিশেষ বার্তা বহন করছে?

মির্জা ফখরুল: আমাদের নেত্রী তো বহুদিন— প্রায় ১৮ বছর সেখানে কবর জিয়ারত করতে যেতে পারেননি। শুধু এখন একটু সুস্থ বোধ করছেন, একটু ভালো লেগেছে। তো ডাক্তার তাকে বলেছে মাঝে মাঝে বাইরে যেতে। এজন্য তিনি প্রথমেই (আদার দেন ট্রিটমেন্ট) শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে বাইরে গেছেন।

বেগম খালেদা জিয়া আগামীতে নির্বাচনি প্রচারণায় নামবেন কি না?

মির্জা ফখরুল: সেটা তো সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করবে। যেহেতু তিনি আমাদের চেয়ারপারসন, তিনি হচ্ছেন লিজেন্ডারি লিডার। সে কারণে তিনি নির্বাচনে প্রচারণাতে নামেন, এমনটা যদি হয়, সেটা বিএনপির জন্য একটা বিরাট একটা প্লাস পয়েন্ট হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা কবে নাগাদ? কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে?

মির্জা ফখরুল: নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখি না, তবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দলীয় দাবি। তাছাড়া তার বিভিন্ন বিষয়গুলো তো আমাদের দেখতে হবে পার্টি হিসেবে। এখানে তার আবাসন— কারণ তার তো কোনো বাড়ি নেই এখানে। চেয়ারম্যান অব এ পার্টি, তার একটা বাড়ি দরকার হচ্ছে। অ্যাট দ্য সেম টাইম তার অফিস ঠিক করা দরকার। তার জন্য গাড়ি ঠিক করা হচ্ছে। কিছু সময় লাগছে। মোটামুটিভাবে তো তৈরি হয়ে আসছে সব, খুব শিগগিরই আসছেন।

বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে কে হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী?

মির্জা ফখরুল: আমাদের দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যদি সুস্থ থাকেন এবং কাজ করার উপযোগী থাকেন, তাহলে তো তিনি হবেন। তার অনুপস্থিতিতে আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবেন। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই।

সর্বশেষ - আর্ন্তজাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত

ভারতের বিধিনিষেধে কী প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের বাণিজ্যে

বিরামপুরে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করে ৬ লাখ টাকার বোরো ধান বিনষ্ট

ঢাকার উদ্দেশে রোম ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

হাবিপ্রবিতে শিক্ষকদের জন্য “আউটকাম বেইজড এডুকেশন (OBE) ক্যারিকুলা” শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ভুঁইফোড় সংগঠন নিয়ে সতর্ক করল বিএনপি

সঙ্গে রয়েছেন দুই পুত্রবধূ : ফিরোজার পথে খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের উল্লাস

টানা ৫ দিন ভারি বর্ষণের আভাস

মালয়েশিয়া যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, সই হবে ৫ সমঝোতা

আসছে নতুন নোট, ফুটে উঠেছে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি