(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) এখনই প্রতিশোধ বলে ফেলাটা হয়তো বাড়াবাড়ি হবে, তবে শিরোপাহীন মৌসুম কাটানোর সঙ্গে চার এল ক্লাসিকোতে হারের ক্ষতটা কিছুটা কমালো রিয়াল মাদ্রিদ। মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোয় তারা জমজমাট উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে বার্সেলোনাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে। অবশ্য কিলিয়ান এমবাপের পেনাল্টি মিস ও অফসাইডে দুটি গোল বাতিল না হলে লস ব্লাঙ্কোসদের জয়ের ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত।

ম্যাচ হারলেও অবশ্য পুরো সময়জুড়ে বলের পজেশন ছিল বার্সার দখলে। শটে এগিয়ে ছিল রিয়াল। ফ্লিকের শিষ্যরা ৬৩ শতাংশ পজেশনের পাশাপাশি ১৫ শটের মধ্যে ৫টি লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে ২২ শটের মধ্যে ৯টি লক্ষ্যে ছিল জাবি আলোনসোর দলের। প্রেসিং ও বলের নিয়ন্ত্রণ বেশি থাকলেও, ম্যাচে ইয়ামাল-রাশফোর্ডদের শট নেওয়ার তেমন সুযোগ দেয়নি রিয়ালের রক্ষণভাগ।

রিয়াল বল পেলেই আক্রমণ শাণালেও, পজেশনে তাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল বার্সা। কাতালানদের হাই-প্রেসিং ফুটবল ও নিয়ন্ত্রিত খেলায় লস ব্লাঙ্কোসরা বারবার পরাস্ত হচ্ছিল। এরই মাঝে মধ্যমাঠ থেকে ২২ মিনিটে দারুণ এক রক্ষণচেরা পাস বাড়ান জুড বেলিংহ্যাম। এবার অফসাইড ফাঁদ এড়ালেন এমবাপেও, পথরোধ করতে এগিয়ে এসেছিলেন সফরকারী গোলরক্ষক ভয়চেক সিজনি। কিন্তু বক্সে ঢুকে তার পাশ দিয়ে মারা এমবাপের জোরালো শট ঠেকানোর উপায় ছিল না। ফরাসি অধিনায়কের উদযাপন এই দফায় আর ভেস্তে যায়নি।
৩৩ মিনিটে বার্সার স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ফেররান তোরেস ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে তার নেওয়া দুর্বল শট ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি থিবো কোর্তোয়াকে। একইভাবে ভিনিসিয়ুসের কাছ থেকে নেওয়া ধীরগতির শট কর্নার বানিয়ে ঠেকান সিজনি। তিন মিনিট পর সমতায় ফেরে কাতালান শিবির। আর্দা গুলারের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে পেদ্রি বাড়ান রাশফোর্ডের দিকে, ইংলিশ ফরোয়ার্ড বক্সে ঢুকে দুজনের মাঝখান দিয়ে ফারমিনকে খুঁজে নেন। নিকটদূরত্ব থেকে শটে বল জালে জড়ান এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
কাউন্টার অ্যাটাকে পেদ্রিকে ঠেকিয়ে ৪৩ মিনিটে আবারও লিড নেয় রিয়াল। আগের গোলটিতে অ্যাসিস্ট করা বেলিংহ্যাম স্কোরবোর্ডে নাম তুললেন এবার। গত ম্যাচেই তিনি গোলখরা কাটিয়েছেন, আজ ভিনিসিয়ুসের ক্রস মিলিটাওয়ের হেডে পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা এই ইংলিশ তারকা। ঠান্ডা মাথায় বেলিংহ্যাম মৌসুমে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করলেন। দলগত প্রচেষ্টায় একটু বাদেই এমবাপে বল জালে জড়ান, কিন্তু অফসাইডের সংকেত দেন সহকারী রেফারি। ২-১ ব্যবধানে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে উভয়পক্ষ। কিছুটা এগিয়ে ছিল রিয়াল, মিনিট চারেকের মাথায় এরিক গার্সিয়ার হাতে বল লাগায় ভিএআরের কল্যাণে পেনাল্টি পায় তারা। কিন্তু স্পট কিকে এমবাপের শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক। অবশ্য গার্সিয়া-লোপেজের ফিনিশিং ব্যর্থতায় অল্প সময়ের মাঝে একাধিকবার ব্লুগ্রানাদের হতাশা সঙ্গী হয়। ইয়ামাল সেন্ট্রাল উইংয়ে খেলা শুরুর পর আরও কিছু সুযোগ তৈরি হয় বার্সার। বিপরীতে ৬৮ মিনিটে রিয়ালের আরেকটি গোল বাতিল হয় অফসাইডে, নিজের দ্বিতীয় গোল না পাওয়ার আক্ষেপে পোড়েন বেলিংহ্যাম।
ম্যাচের বাকি সময়ে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হয়েছে। বেশ কয়েকটি বদলি নামায় উভয় দল। এর মধ্যে নজর কেড়েছেন ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগোকে নামাতে তাকে তুলে নেওয়ায় ডাগআউটে যাওয়ার আগপর্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই লেফট উইংগার। শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে পরিবর্তন আনতে পারেনি কেউই। ২-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান ধরে রাখল আলোনসোর দল। বার্সার চেয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে ১০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৭। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে কাতালানরা দুইয়ে রয়েছে। -নিউজ ডেস্ক



















