(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) চিত্রনায়ক সালমান শাহের (চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন) মৃত্যুতে এত বছর পর নতুন করে মামলা হওয়ায় ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহের তীর সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা হক ও খলনায়ক আশরাফুল হক ডনের দিকে। মামলার সাত দিন না যেতেই তাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। তবে মামলার পর থেকে তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ মনে করছে, তারা গা ঢাকা দিয়েছে, তবে যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারে।
গত ২১ অক্টোবর সালমান শাহের মামা মোহাম্মদ আলমগীর রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনকে আসামী করা হয়েছে। সামিরার পাশাপাশি অন্য আসামিরা হলেন- শিল্পপতি ও সাবেক চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুছি, খলনায়ক ডন, ডেবিট, জাভেদ, ফারুক, মে-ফেয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আব্দুস ছাত্তার, সাজু এবং রেজভি আহমেদ ফরহাদ (১৭)। এছাড়াও মামলায় আরও অনেককে অজ্ঞাত হিসেবে আসামী করা হয়েছে।
রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক বলেন, আমরা তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জেনেছি। তাদের খুঁজছি এবং অবস্থান শনাক্ত হলেই গ্রেফতার করা হবে।
পুলিশ মনে করছে, সামিরা ও ডন মামলা হওয়ার পর থেকে গা ঢাকা দেওয়ায় তারা যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন। এজন্য আদালতের মাধ্যমে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ আশঙ্কা করছে, যদি তারা দেশ ছাড়েন, তবে মামলার বিচার থেকে নিহতের প্রিয়জনরা বঞ্চিত হবেন এবং তদন্তে ব্যাঘাত ঘটবে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল আলম খন্দকার জানান, তাদের অবস্থান এখনো জানা যায়নি। গ্রেফতারের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যুর পর রমনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। তার আগে রমনার একটি ফ্লাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে প্রচার চালানো হয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।
সম্প্রতি রমনা থানায় দায়েরকৃত মামলায় বাদী মোহাম্মদ আলমগীর উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার বোন নিলুফার জামান চৌধুরী, বোনের স্বামী কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী এবং তাদের ছোট ছেলে শাহরান শাহ নিউ ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহকে দেখতে যান। সেখানে তারা দেখতে পান, সালমান ঘুমাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর প্রডাকশন ম্যানেজার সেলিম ফোন করে জানান, সালমানের কিছু হয়েছে। দ্রুত তারা বাসায় ফিরে সালমানকে শয়নকক্ষে নিথর পড়ে থাকতে দেখেন এবং কিছু নারী তার হাতে-পায়ে তেল মালিশ করছেন। পাশের কক্ষে সামীরার আত্মীয় রুবি বসে ছিলেন।
সালমানের মা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পথে তারা গলায় দড়ির দাগ এবং মুখ ও পায়ে নীলচে দাগ দেখতে পান। পরে তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, সালমান অনেক আগেই মারা গেছেন।
মোহাম্মদ আলমগীর আরও উল্লেখ করেন, সালমানের বাবা মৃত্যুর আগে ছেলের মৃত্যু হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করেন। ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করেন। এতে তিনি রমনা থানার অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ ও সিআইডির মাধ্যমে তদন্তের আবেদন করেন।
মামলার পর রমনার যে বাসায় সালমান শাহ থাকতেন, সেখানে পুলিশ সম্প্রতি পরিদর্শন করেছে। আগের মামলায় গ্রেফতার এক আসামীর পুরনো জবানবন্দীর নানা প্রশ্নও পুলিশ বিবেচনা করেছে। -নিউজ ডেস্ক

 
                    








 
                                     
                                     
                                     
                                    








