মো. ইসমাইল হোসেন (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) জেলার হাট-বাজারে আগাম জাতের আমন ধান উঠতে শুরু করলেও মৌসুমের শুরুতেই ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। বিরল উপজেলার ধুকুরঝাড়ী বাজার এবং সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ হাটে ধান বেচাকেনা জমজমাট হলেও, বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না বলে অভিযোগ করছেন তারা।
ভোর সাড়ে ৫টা থেকে কৃষকেরা ভটভটি, নছিমন ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে ধান নিয়ে হাটে আসতে শুরু করেন। সকাল ১১টা পর্যন্ত চলে কেনা-বেচা। বর্তমানে আগাম জাতের বিনা-৭, বিনা-১৭, বিনা-৭৫ ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১০২৫ থেকে ১০৭৫ টাকায়। এছাড়া পাথরভাটা, কোটরাপাড়ি বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকায়। অন্যদিকে, পুরোনো বোরো সম্পা কাটারি ও বগুড়া কাটারি প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৬৫০ টাকায়।
উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় এই দামে ধান বিক্রি করে লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা, মূলধনও তুলে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক কৃষক।
পাইকাররা বলছেন, বাজারে এলসি (আমদানিকৃত), সরকারি টিআর (টেস্ট রিলিফ) এবং জিআর (গ্র্যাচুইটি রিলিফ)-এর চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তাদের বিক্রি কমে গেছে। সেই তুলনায় বেশি দামে ধান কিনে তাদের পোষাচ্ছে না। ক্রেতারা জানান, মিল চালানোর জন্য কাঁচা ধান কিনলেও, চালের দাম বেশি হওয়ায় ধান কেনায় সাশ্রয় হচ্ছে না। বাজারে সরকারি চালের চাপ থাকায় বিক্রি কমে যাওয়াই মূল কারণ বলে মনে করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এবারে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছু এলাকায় ধান কাটাই-মাড়াই চলছে, আর কয়েকদিনের মধ্যে তা পুরোপুরি শুরু হবে। এবছর ২৮ হাজার ৯২৭ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে এবং ৯৬ হাজার ৫০৯ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফলন বাম্পার হওয়া সত্ত্বেও কেন কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না? সরকারি চালের অতিরিক্ত সরবরাহ ও আমদানির প্রভাব যদি ধানের দামে এত বড় আঘাত হানে, তবে স্থানীয় কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারের কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত – এই প্রশ্ন এখন দিনাজপুর অঞ্চলের কৃষকদের মুখে মুখে ঘুরছে।


















