(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) চাচা-চাচিকে বাবা-মা সাজিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পান কামাল হোসেন। বর্তমানে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবার তার প্রকৃত বাবা-মা শনাক্তে ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে দুদক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
মামলার সর্বশেষ অবস্থান জানিয়ে আক্তার হোসেন বলেন, কামাল হোসেন ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার। তিনি সরকারের একজন সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ইতোপূর্বে তিনি মাগুরার সাবেক সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইউএনও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার প্রকৃত পিতা-মাতার নাম হলো- আবুল কাশেম ও হাবীয়া খাতুন এবং তার চাচা-চাচি হলেন আহসান হাবীব এবং সানোয়ারা খাতুন। তার চাচা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
দুদক মহাপরিচালক আরও বলেন, কামাল হোসেন সুকৌশলে তার প্রকৃত পিতা-মাতার পরিবর্তে আপন চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবীব ও চাচি সানোয়ারা খাতুনের নাম ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং চাকরি লাভসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা-মাতা ও তার চাচা-চাচির ডিএনএ টেস্ট করার জন্য কমিশন বরাবর আবেদন দাখিল করেন।
আক্তার হোসেন আরও বলেন, কমিশন তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা-মাতা ও তার চাচা-চাচির ডিএনএ টেস্ট করার জন্য অনুমোদন জ্ঞাপন করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা-মাতা ও তার চাচা-চাচির ডিএনএ টেস্ট করবেন।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, নাচোল ইউএনও এর ডিএনএ টেস্টের বিষয়ে আমিও মৌখিক শুনেছি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চিঠি আসেনি। চিঠি না পাওয়া পযন্ত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব না।
আর নাচোল উপজেলার ইউএনও কামাল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও সে কোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে, স্থানীয় উপজেলাবাসী ইউএনও এর বিষয়ে সোসাল মিডিয়া সমালোনার ঝড় বইছে। কেউ লিখেছেন এমন দুর্নীতিবাজ ইউএনও উপজেলায় প্রয়োজন নেই। কেউ বা লেখেছে আলহামদুলিল্লাহ। দ্রুত তার ডিএনএ টেস্ট করা প্রয়োজন।



















