বুধবার , ৫ নভেম্বর ২০২৫ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

নির্বাচনে কে দেবেন বিএনপির নেতৃত্ব, জিতলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কে?

প্রতিবেদক
admin
নভেম্বর ৫, ২০২৫ ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। সেই তালিকায় আছেন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ও চিকিৎসাধীন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও। তিনি লড়বেন তিনটি আসনে, আর দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বগুড়া-৬ আসন থেকে। প্রশ্ন উঠেছে দলটির নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্ব দেবেন কে, আর বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? কারণ, খালেদা জিয়া এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন, আর তারেক রহমান ঠিক কবে দেশে ফিরবেন তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেননি তার দল।

যদিও দলটি বলছে, তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়াকে তিনটি আসনে প্রার্থী হিসেবে রাখা দলটির একটি ‘নির্বাচনী কৌশল’ এবং তাদের ধারণা নির্বাচনে জিতলে সরকার গঠনের বিষয়টিতে তারেক রহমানই নেতৃত্ব দেবেন।

আবার কেউ কেউ বলছেন, তারেক রহমান দেশে না ফেরা পর্যন্ত তার ফেরা নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে এবং সে কারণেই বিএনপি নেতৃত্বের জায়গায় খালেদা জিয়াকেই রেখেছেন তিনটি আসনে প্রার্থী করার মধ্য দিয়ে।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলছেন, ‘আমরা আশা করি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে নেতৃত্ব দেবেন। নির্বাচনে মাঠে ময়দানে নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান। আর বর্তমান বাস্তবতায় তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। এটাই আমাদের চিন্তা।’

ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা তারেক রহমান ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

খালেদা জিয়া নাকি তারেক রহমান

বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী, খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন ফেনী-১, বগুড়া-৭ এবং দিনাজপুর-৩ আসন থেকে। অন্যদিকে, তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন।

খালেদা জিয়া নির্বাচনে প্রথম অংশ নিয়েছিলেন ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে, তার জ্যেষ্ঠ ছেলে তারেক রহমান এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যদিও ২০০৮ সালের ২২শে জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন, কিন্তু সেই নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হয়নি।

আওয়ামী লীগ আমলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

মূলত এরপর থেকে দলীয় কার্যক্রম তাকে ঘিরেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে তারেক রহমান এসব কর্মকাণ্ড লন্ডন থেকে পরিচালনা করে আসছিলেন।

এর আগে ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট বিরাট জয় নিয়ে সরকারে আসার পর তারেক রহমানকে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

অনেকে মনে করেন, সেই সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই খালেদা জিয়া কার্যত তখনই তারেক রহমানকে দলের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে তুলে ধরতে শুরু করেছিলেন।

যদিও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন- এ নিয়ে রাজনৈতিক সংকটের মুখে ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি চরম সংকটে পড়েছিল। ওই বছরের ৭ মার্চ গ্রেফতার করা হয়েছিল তারেক রহমানকে। পরে তার মা খালেদা জিয়াও গ্রেফতার হয়েছিলেন।

১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে ১৩টি মামলায় জামিন পান তারেক রহমান।

এরপর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন। লন্ডন যাত্রার আগে তার মা খালেদা জিয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে সুস্থ না হয়ে উঠা পর্যন্ত তারেক রহমান রাজনীতির বাইরে থাকবেন।

তবে ২০১৮ সালের ২৪শে এপ্রিল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথমবারের মতো স্বীকার করেন যে ২০১২ সালে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয়েছে।

এর মধ্যেই লন্ডন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন তারেক রহমান। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হলে দলের পূর্ণ কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব তার হাতেই উঠে আসে।

দলটির সভা সমাবেশে গত কয়েক বছর ধরে নেতাকর্মীদের কাছে তারেক রহমানকেই মুখ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।

Khaleda_Zia_2
১৯৯১ সালে নির্বাচনি প্রচারে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্টেই নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডন সফরে গেলে সাত বছর পর তার সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ হয়।

কিন্তু দলটির সার্বিক কর্মকাণ্ড তারেক রহমানের নেতৃত্বেই পরিচালিত হচ্ছে, এমনকি লন্ডনে তার সঙ্গে বৈঠকের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তবে দলটির একাধিক নেতা বলেছেন, খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় ছিলো অনেক, কারণ তিনি অনেক দিন ধরেই হাসপাতালে বা বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন।

এসব নেতাদের ধারণা ছিল প্রতীকী হিসেবে খালেদা জিয়া হয়তো একটি আসনে থাকবেন আর মূল নেতা হিসেবে তারেক রহমানই হয়তো একাধিক আসনে নির্বাচন করবেন।

কিন্তু দলের প্রার্থী ঘোষণার পর দেখা গেলো খালেদা জিয়া তিনটি আসনে আর তারেক রহমান একটি আসনে নির্বাচন করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিএনপি এই বার্তাই দিয়েছে যে- খালেদা জিয়া এখনো সক্রিয় আছেন এবং তিনিই দলটির শীর্ষ নেতা।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় খালেদা জিয়াকে প্রার্থী করে আনাটা হলো দলটির নির্বাচনী কৌশলের অংশ। দলটির অবস্থান বা নির্বাচন নিয়ে যে অনেক প্রশ্ন এখনো আছে, সে বিষয়ে একটা বার্তা গেছে যে নির্বাচন নিয়ে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আর খালেদা জিয়ার ভাবমূর্তি কাজে লাগানোর কৌশল তো আছেই।’

তার মতে, তারেক রহমান এখনো দেশে না আসায় তার ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা বা উদ্বেগ এখনো কাটেনি।

লেখক ও বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদও বলছেন, এই অনিশ্চয়তার কারণেই হয়তো তিনটি আসনে নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে প্রার্থী করে বিএনপি বোঝাতে চেয়েছে যে তিনিই এখনো দলনেতা।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন ও সরকারের কে নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির হয়ে তা এখনো পরিষ্কার না। এমনও হতে পারে যে খালেদা জিয়া দলনেতা হিসেবেই থাকবেন, আর দলটি সরকার গঠন করলে তাতে নেতৃত্ব দিবেন তারেক রহমান।’

তবে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের কথায় এটা কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে যে, তারা নির্বাচনে জিতলে তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেবেন- এই চিন্তাই দলের মধ্যে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

যদিও এসব কিছুই স্পষ্ট হবে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসার পর। তিনি কবে ফিরবেন তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনো তার দল জানাতে পারেনি। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

সর্বশেষ - আর্ন্তজাতিক