(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) নানা প্রয়োজনে বা ভুল থাকলে জাতীয় পরিচয়পত্রে সংশোধন করে থাকেন নাগরিকরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন আসে বয়স সংশোধনের জন্য। এতদিন মাঠ পর্যায়েও বয়স সংশোধনের কাজ করা হলেও এখন থেকে সব বয়স সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। ফলে মাঠ পর্যায়ের ইসি কর্মকর্তারা এই ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছেন।
ইসি সূত্র জানায়, গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর নেতৃত্বে জাতীয় পরিচয় সংশোধন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সংশোধন নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে প্রস্তাব করা হয়েছে, মাঠ পর্যায়ে বয়স সংশোধনের কার্যক্রম বন্ধ করে তা শুধু কেন্দ্রীয়ভাবে করার বিধান যুক্ত করতে হবে। এ বিধান যুক্ত হলে উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বয়স সংশোধনের কার্যক্রম বন্ধ হবে এবং তারা এ সংক্রান্ত ক্ষমতাও হারাবেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ও সংশোধন কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া বর্তমানে ছয়টি ক্যাটাগরিতে সংশোধন কার্যক্রম পরিচালনা হলেও তা কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়নি। এনআইডি সেবা আরও সহজ করার বিষয়ে নানা প্রস্তাব আলোচনা হয়েছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে নয় বছর পর্যন্ত বয়স মাঠ পর্যায়ে সংশোধন করা হয় এবং নয় বছরের বেশি হলে তা কেন্দ্রীয়ভাবে সংশোধন করা হয়। তবে নতুন করে জাতীয় পরিচয় সংশোধনের এসওপি সংশোধন করে যদি বয়স সংশোধন কেন্দ্রীয়ভাবে করার বিধান যুক্ত হয়, তাহলে মাঠ পর্যায়ে বয়স সংশোধনের আর কোনো কার্যক্রম থাকবে না। এনআইডিতে একদিনের বয়স সংশোধনও তখন কেন্দ্রীয়ভাবে করতে হবে। এছাড়া এসওপিতে আরও কয়েকটি ছোটখাটো সংশোধন আনা হয়েছে।
এনআইডিতে বয়স সংশোধনের বিষয়টি মাঠে না রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে কি না— জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ.এস.এম. হুমায়ুন কবীর ঢাকা মেইলকে বলেন, বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বিষয়টি কমিশনের কাছে উপস্থাপন করব, তারপর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
বর্তমানে ছয় ক্যাটাগরিতে (ক–১, ক, খ–১, খ, গ ও ঘ) এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম চলছে—তা কমিয়ে আনার কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর বলেন, ক্যাটাগরিগুলো আগের মতোই থাকবে। তবে নতুন করে আপিল ও রিভিশন—এই দুটি ক্যাটাগরি যুক্ত হতে পারে।
সামনে নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর এনআইডি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান থাকবে কি না—এ বিষয়ে ডিজি এনআইডি বলেন, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সীমিত আকারে সংশোধনের কাজ চলতে পারে। তা কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। তবে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের কার্যক্রম ১০ নভেম্বর থেকে ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ক্র্যাশ প্রোগ্রামের পর এনআইডি সংশোধনে কঠোর অবস্থানে ইসি
দীর্ঘ সময় ধরে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ এনআইডি সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে এখন থেকে এনআইডি সংশোধনে আরও কঠোর অবস্থান নেবে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে আমরা ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ আবেদন নিষ্পত্তি করেছি। কিন্তু ডাটাবেইজের তথ্য ইউনিক রাখতে হলে এনআইডি সংশোধনে আমাদের কঠোর হতে হবে। আমরা সেই পরিকল্পনা করছি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃতীয় ধাপের খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। বর্তমানে ইসির সার্ভারে প্রায় ১ লাখের মতো এনআইডি সংশোধন আবেদন রয়েছে। -নিউজ ডেস্ক



















