(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) জুলাই সনদ দ্রুত ঘোষণা ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। একইসঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রীয় গণহত্যার বিচারসহ ১৩ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরে সংগঠনটি। সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী।
সংবাদ সম্মেলনে হাদী বলেন, সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন সরাসরি ভোটে হলে ইসলামী দলসহ সব রাজনৈতিক দল নারীদের অংশগ্রহণে বাধ্য হবে। অন্যথায় আগের মতো ৩০০ আসনের সংসদে গুন্ডা-মাস্তান এমপিদের আবির্ভাব ঘটবে, যাদের জনগণ ভয় পায়। এতে অভ্যুত্থানের চেতনার কোনো মূল্য থাকবে না।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে হাদী বলেন, বিএনপির একটি অংশ ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পুরোনো শর্তে রাজনীতি চালাতে চায়। তারা আমাদের বিএনপির বিরুদ্ধাচারে প্ররোচিত করছে। তবে আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ প্রশ্নে বিএনপি যতখানি বাংলাদেশের, আমরাও ততখানি বিএনপির। তাই ভালোবেসে সমালোচনা করি।
তিনি আরও বলেন, যদি কেউ বিপ্লবের চেতনায় নির্বাচনে আসে, তাহলে আমরা পাশে থাকব। না হলে নির্বাচন বর্জনের ডাক দেওয়া হবে। দেশের পাঁচ কোটি মানুষ পরবর্তী গণঅভ্যুত্থানের জন্য প্রস্তুত।
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা না করা হলে ওই দিন বিকেলে শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত ‘লাল মার্চ’ কর্মসূচি পালন করা হবে।
১৩ দফা প্রস্তাবনা:
১. ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের সংগ্রামে শহীদদের ‘রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
২. জুলাই আন্দোলনে আহতদের জন্য স্থায়ী পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচন বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. ফ্যাসিবাদী শাসনামলের দোষী জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে।
৫. ভারতীয় আধিপত্যসহ সবধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
৬. জুলাই, পিলখানা ও শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৭. রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদ ফিরতে না পারে।
৮. ৩৬ জুলাইকে ‘জাতীয় মুক্তি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
৯. বৈষম্যবিরোধী ও ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে।
১০. সংবিধান থেকে জনবিরোধী ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
১১. গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
১২. জুলাই সনদের ভাষা সহজ, বোধগম্য ও জনবান্ধব করতে হবে।
১৩. সনদ চূড়ান্ত করার আগে তা জনগণের মতামতের জন্য অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে।
