মঙ্গলবার , ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রচলনের দাবীতে দিনাজপুরে পর্দানশীন নারীদের মানববন্ধন

প্রতিবেদক
admin
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫ ৫:৪৬ অপরাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) এনআইডিসহ যাবতীয় পরিচয় যাচাইয়ে চেহারা ও ছবি মেলানোর মত সেকেলে পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করাসহ ৩ দফা দাবীতে দিনাজপুর জেলার পর্দানশীন নারী সমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সম্মুখ সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে পর্দানশীন নারীরা স্থানীয় নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। ৩ দফা দাবীর মধ্যে রয়েছে- ১. বিগত ১৬ বছর যাবত যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা। ২. পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসীর অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার প্রদান করা। সকল ক্ষেত্রে পরিচয় সনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর সেকেলে পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা। ৩. পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ায় সময় পুরুষ নয়, নারী সহকারী বাধ্যতামূলক রাখা।
দিনাজপুর জেলার পর্দানশীন নারী সমাজের আহবায়ক মোছাঃ শাহনাজ পারভীনের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন পর্দানশীল নারী সমাজের নেত্রী সালসাবিল, সানজিদা খানম, শাওন, আরিমা, ওয়াকারুন নেছা, সায়মা খানম, সিনথিয়া, শোভা, সাউদিয়া, শেলভি, সীমা আখতার, সুমাইয়া শারমীন, ইশরাত জাহান নিসা, আহমেদ জুথিকা প্রমুখ। মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আহবায়ক শাহনাজ পারভীন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রধর্ম হচ্ছে ইসলাম। বাংলাদেশে শতকরা ৯৮% মানুষ হচ্ছে মুসলমান। তারপরও এই দেশে পরিপূর্ণ পর্দা করতে গেলে পর্দানশীন নারীদের প্রতিনিয়ত নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে সরকারী-বেসরকারী প্রতি ক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন পর্দানশীন নারীরা। পর্দানশীন নারীদের নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে মৌলিক ও নাগরিক অধিকার আটকে রেখে ছবি তুলতে ও চেহারা দেখাতে বাধ্য করা হচ্ছে। অসংখ্য পর্দানশীন নারী এখনও জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি। এ সমস্ত পর্দানশীন নারীর পিতা-মাতা বাংলাদেশী এবং তারা নিজেরাও বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বঞ্চিত হয়ে আসছেন। গত ১৬ বছর যাবত জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সাবেক কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা শুধুমাত্র মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে। এতে পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্টে পতিত হয়েছেন। অনেক পর্দানশীন নারী অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন, কিন্তু এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করতে পারছেন না। অথচ সম্পত্তি বিক্রি করতে পারলে তিনি চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারতেন। অনেক পর্দানশীন নারীর বাড়িঘর দুর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে গেছে, কিন্তু এনআইডির ছাড়া ত্রাণ নিতে পারছেন না। অনেক বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা পর্দানশীন নারী এনআইডির অভাবে বাসাভাড়া নিতে পারছেন না, বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করতে পারছেন না। পর্দার সাথে কোন চাকুরী করে জীবন নির্বাহ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। মুখচ্ছবির অজুহাত দিয়ে পর্দানশীন নারীদের এই অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। “পর্দানশীন নারীরা বেপর্দা হলে শিক্ষা পাবে, নয়ত পাবে না”- এমন অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষার সময় পরিচয় যাচাইয়ের জন্য চেহারা ও ছবি মেলানো মত সেকেলে পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন পর্দানশীন নারীর চেহারার ছবি বেগানা পুরুষ বারংবার দেখে বেপর্দার ঘটনা ঘটছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পুরুষ শিক্ষক ও পুরুষ স্টাফ দিয়ে সেই পর্দানশীন নারীর চেহারা ও ছবি মেলানো হচ্ছে। পর্দানশীন নারীকে বলা হচ্ছে, “তোমার চেহারা না দেখালে তোমাকে চিনবো কিভাবে?” অথচ চেহারা দেখানো ছাড়াও পরিচয় যাচাইয়ের আরো অনেক আধুনিক ও নির্ভুল পদ্ধতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি জাতীয় নির্বাচন কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রনালয় অনতিবিলম্বে আমাদের দাবীসমূহ পূরণ করবেন। অন্যথায় দেশব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও পর্দানশীন নারীরা বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনে নামবে ইনশাল্লাহ।

সর্বশেষ - ক্যাম্পাস