(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) প্রথম ছুটির দিনেই প্রাণ ফিরে পেল অমর একুশে বইমেলা। গতকালকের তুলনায় মেলার স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোতে বেড়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। বিশেষ করে শিশুপ্রহরে শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার বেলা বাড়ার সাথে সাথে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গনে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পায় বইপ্রেমীদের পদচারণা। এদিন সকাল এগারোটায় খুলে মেলার দ্বার। বেলা এগারোটা থেকে একটা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। এগারোটায় মেলার শিশুচত্বরে সিসিমপুর মঞ্চ উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। সিসেমি ওয়ার্কশপের বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম, বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মোজাহিদুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
শিশুপ্রহরে বাবা মায়ের হাত ধরে মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে বেড়ায় শিশুরা। কোনো কোনো শিশুকে অধীর আগ্রহে বইয়ের প্রচ্ছদে চোখ বুলাতে দেখা যায়, কেউ আবার দৌড়ে বেড়াচ্ছিলেন মেলা প্রাঙ্গণে। শিশু প্রকাশনী প্রগতি, ঘাসফড়িং, ইকরিমিকরি, ঢাকা কমিক্স, ডাকসহ বেশ কিছু প্রকাশনীতে শিশুদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মেলায় সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, টুকটুকি, ইকরি ও শিকুর সাথে ছবি তুলতে শিশুদের ভীড় করতে দেখা গেছে।
এসময় কথা হয় মেলার শৈশব প্রকাশে কর্মরত রুমানা আক্তার মুক্তার সাথে। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, শিশুদের আগ্রহের জায়গাগুলো চিন্তা করে আমরা কমিক্স, ছোট গল্প, ছড়া, ভূতের গল্পের বই নিয়ে এসেছি। শুক্রবার হিসেবে মেলায় শিশুদের আগ্রহ বেশ ভালো। এবার মেলা নিয়ে আমরা আশাবাদী।
এদিকে বিকেলের পর থেকে মেলায় আগতদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। মেলা প্রাঙ্গণে বই কেনার পাশাপাশি আড্ডা আর ছবি তোলায় মুহূর্তগুলোকে স্মরণীয় করে রাখেন দর্শনার্থীরা।
মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনীতে কর্মরত তামীম আল রাজী জানান, এবছর আমাদের প্রায় ৫০ টির মত নতুন বই আসবে, এর মধ্যে আজকে ৩ টি নতুন বই চলে এসেছে । মেলা যেহেতু মাত্র শুরু তাই পাঠকের চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই বেশি। তবে শুক্রবার মেট্রোরেল চালু থাকলে আরও বেশি পাঠক সমাগম হত। ঘুরেফিরে মেলার বেশিরভাগ প্রকাশনা সংশ্লিষ্টরা শুক্রবার মেট্রোরেল চালু রাখার কথা বলেছেন।
তবে মেলার দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও শেষ হয়নি অনেক প্রকাশনীর স্টলের কাজ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গনে এখনও কিছু কিছু প্রকাশনীর স্টলে চলছে সাজসজ্জার কাজ, আবার কোথাও এখনও হাতুড়ি পেরেকের ঠুকঠাক আওয়াজ। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে স্টল নির্মাণ ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ সামগ্রী। এ নিয়ে বিরক্ত প্রকোশ করেছেন মেলায় আগত পাঠকরা। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, মেলার দুদিন পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ এখনও মেলার অব্যবস্থাপনা চোখে পড়ছে। এদিকে এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি বইমেলার লিটল ম্যাগ চত্বর। লিটল ম্যাগ চত্বরের অর্ধেকের বেশি স্টল আজও ফাঁকা ছিল। -নিউজ ডেস্ক