স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দেশের সবচেয়ে বড় দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টায় ঈদের প্রথম নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান।
২৩ একর জমি নিয়ে বিস্তৃত গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায়ের জন্য সারা দেশ থেকে মুসল্লিরা অংশ নেন। তাদের শান্তিপূর্ণভাবে ইবাদতের ব্যবস্থা করতে নানা ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদ জামাত রূপ নেয় মিলনমেলায়। এত বড় ঈদ জামাতে লাখো মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারার আনন্দ সবার চোখেমুখে। জানা যায়, ওযু, যানবাহন রাখার ব্যবস্থা, মেডিকেল টিম, খাবার পানিসহ ১৪৫টি মাইক রাখা হয়। ছিল চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে বৈদ্যুতিক লাইটিং করা হয়।
আশরাফুল নামে এক মুসল্লি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বরতা থামাতে আমরা ঈদের নামাজ পড়ে দোয়া করেছি, যেন মহান আল্লাহ্ তাদের রক্ষা করেন। এছাড়া নিজের পরিবারসহ দেশের শান্তি কামনায় দোয়া করেছি।’ দেশের সবচেয়ে বড় মাঠে নামাজ পড়তে এসে খুব আনন্দ লাগছে। প্রতি বছর আমরা এই বড় মাঠে নামাজ আদায় করি। একসঙ্গে এত মুসল্লি নামাজ পড়া সত্যি আনন্দের। আমাদের দাদারা নামাজ পড়েছিলেন। এখন আমরা নামাজ পড়ছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও প্রশংসার দাবিদার।
ঈদের নামাজের ঈমাম হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান বলেন, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা সঠিকভাবে চলার জন্য মহান আল্লাহ্র কাছে দোয়া করা হয়। দেশে যাতে কোনো প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টি না হয়। মানুষে মানুষে হানাহানি, বিবাদ না হয়। এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই ঈদুল ফিতরের নামাজের পর সারা দেশে শান্তি কামনা ও ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দিনাজপুরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে গোর-এ-শহীদ দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করলাম। শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমরা আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করেছি, যাতে মুসিল্লারা সঠিকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন। রংপুর বিভাগের আটটি জেলার মুসল্লিরা এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে আসেন। এছাড়াও অন্য বিভাগের মানুষরাও আসে। এবার লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগম ঘটে এই মাঠে।’
২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর এখনে নামাজ আদায় করেন দিনাজপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এবার সমবেত হন প্রায় কয়েক লক্ষাধিক মুসল্লি।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে দিনাজপুর ‘গোর এ শহীদ বড় মাঠে’ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২২ একর আয়তনের গোর এ শহীদ বড় ময়দানে ২০১৫ সালে ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দেড় বছর পর এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় এবং ২০১৭ সাল থেকেই প্রতিবার দিনাজপুর জেলাসহ পাশ্বর্বর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করে আসছেন।